সেই মাথাবিহীন লাশটি সুমির, স্বামী গ্রেফতার

মোবাইল ফোনে কথা বলা এবং অন্য পুরুষের সাথে মেলামেশার কারণে নিজ স্ত্রীকে হত্যা করেন স্বামী। এরপর মাথা কেটে লাশ বস্তাবন্দি করে ফেলে দেন ড্রেনে। আর মাথাটি পলিব্যাগে ভরে নিয়ে ফেলে দেন বাসা থেকে চার কিলোমিটার দূরে এক কবরস্থানের ঝোপে।

ঘটনার পর দিন ২৬ অক্টোবর দিবাগত রাত ১০টার দিকে ড্রেন থেকে অজ্ঞাত হিসেবে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

এর চার দিন পর আটক করা হয় খুনি ও তার দুই সহযোগীকে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ-সিএমপির হালিশহর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এসএএম বদরুল কবীর এ তথ্য জানান।

মস্তকবিহীন উদ্ধার হওয়া ওই তরুণীর নাম সুমি ইসলাম (২০)। স্বামীর সঙ্গে থাকতেন চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানার ছোটপুল ইসলাম হাজীর ব্রিকফিল্ডের পাশের নাবালক মিয়ার বাড়িতে।

এসএএম বদরুল কবীর বলেন, অন্য ছেলেদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতেন সুমি। তবে বিষয়টি ভালোবাবে নিতে পারেননি তার স্বামী জাহিদ হোসেন রাজু (৩৭)। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো। ২৫ অক্টোবর মোবাইলে কথা বলা নিয়ে জাহিদ হোসেন রাজুর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় সুমির। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুমিকে গলাকেটে হত্যা করে জাহিদ। পরে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ধরটি বস্তাবন্দি করে ফেলা হয় হালিশহর থানার ছোটপুল ইসলাম হাজীর ব্রিকফিল্ডের পাশের ড্রেনে। আর মাথা পলিব্যাগে ভরে নিয়ে ফেলা হয় বাসা থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে নগরীর ডবলমুরিং থানার বেপারী পাড়ার পইট্টা দীঘির পশ্চিম পাড় কবরস্থানের ঝোপে।

মাথাবিহীন লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ প্রথমে জাহিদ হোসেন রাজুকে গ্রেফতার করে। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন হত্যার কথা। পুলিশ তার দেখানো মতেই মাথাটি উদ্ধার করে।

জাহিদ হোসেনের দেয়া তথ্যমতে গত রাতে গ্রেফতার করা হয় জড়িত আবদুল জলিল ও ফেরদৌস আকতার নামে দুজনকে। হত্যার পর তারা লাশ লুকাতে সহযোগিতা করেন জাহিদকে। এছাড়া তারা সুমির প্রতিবেশী।

নিহত সুমি ইসলাম খুলনার পোটপাড়া এলাকার শহিদুল ইসলামের মেয়ে। গত দেড় বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। সুমি চাকরি করতেন সিডিএ আবাসিক এলাকায় একটি বুটিক হাউজে।

জাহিদ হোসেন রাজু পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা থানার কাজীপাড়া গ্রামের হারুনুর রশিদের ছেলে।

সিএমপির হালিশহর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম ওবায়দুল হক বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাহিদ স্বীকার করেছে দাম্পত্য কলহ থেকে এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে। বিয়ের পর থেকে সুমির সঙ্গে জাহিদের বনিবনা হচ্ছিল না। বিভিন্ন জনের সঙ্গে সুমির মেলামেশা নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো।