সোমবার থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা শিক্ষকদের

প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার দাবিতে এবার লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারি ফেডারেশন।

সোমবার সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হবে।

রোববার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ১০ জুন থেকে টানা আট দিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলন করছেন তারা। শনিবার ঈদের দিনেও সড়কে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ শেষে তারা মিছিল করেছেন।

নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, ‘রমজান ও ঈদের জন্য আমাদের আন্দোলন (অবস্থান কর্মসূচি) অর্ধবেলা হলেও কাল থেকে দিনরাত কর্মসূচি পালিত হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এমপিওভুক্ত করা না হবে, ততক্ষণ আমরা রাজপথেই অবস্থান করব।’

আন্দোলনকারী শিক্ষকরা জানান, সরকার ২০১০ সালে সর্বশেষ এমপিওভুক্তি দিয়েছিল। এরপর আর কোনো অর্থবছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়নি। অথচ বরাবরই বলে আসছে এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া, প্রতিনিয়ত দিতে হবে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় থেকে দেশের সেবা করলেও চরম অর্থকষ্টে ভুগছেন তারা। হারাচ্ছেন সামাজিক মর্যাদাও।

এবার সরকার থেকে সিদ্ধান্ত না নিয়ে ঘরে ফিরে যাবেন না বলেও জানান আন্দোলনরত শিক্ষকরা।

আন্দোলনরত এক শিক্ষক বলেন, গত ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী যখন আশ্বস্ত করে শিক্ষকদের বাড়ি ফিরিয়ে দিলেন, এরপর ৯ এপ্রিল শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার বাসভবনে গিয়েছিলাম। এই বাজেটেও আমাদের জন্য কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। তাই আবারও রাজপথে আসতে বাধ্য হয়েছি। শিক্ষামন্ত্রীর একগুঁয়েমির কারণে নন-এমপিও প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ বিনয় ভূষণ রায় বলেন, ঢাকার পথে ইতিমধ্যে অনেক শিক্ষক রওনা করেছেন। সোমবার ঘোষিত লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে তারা অংশ নেবেন।

এর আগে একই দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচিতে নামে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারি ফেডারেশন। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অনশন করার পর প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে তারা অনশন ভঙ্গ করে ফিরে যায়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা তখন তাদের দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দেন।

সারাদেশে বর্তমানে সাড়ে সাত হাজার নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে ৫ হাজার ২৪২টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাকে।

স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এসব প্রতিষ্ঠানকে এখনো এমপিওভুক্ত না করায় ফের আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকরা।