সোহরাওয়ার্দীতে কুঁড়ে ঘরে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেবেন পোপ

খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের (ক্যাথলিক) সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস তিন দিনের সরকারি সফরে ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশে আসছেন। ১ ডিসেম্বর সকালে তিনি ঐতিহাসিক শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সমাবেশে লাখো ভক্তকুলের উদ্দেশে বক্তৃতা দেবেন।

ওই সমাবেশকে ঘিরে বাঙালির চিরায়িত সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তুলতে উদ্যানের লেকের দক্ষিণ পাশে বাঁশ আর ছন দিয়ে কুঁড়ে ঘরের আদলে নির্মিত হচ্ছে বিশেষ মঞ্চ। এ মঞ্চে দাঁড়িয়েই বক্তব্য দেবেন পোপ ফ্রান্সিস।

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সরজমিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে ক্যাথলিক বিশপ কনফারেন্স অব বাংলাদেশ (সিবিসিবি) নেতাদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মূল মঞ্চসহ সামগ্রিক নির্মাণ কাজ চলছে। সার্বিক নির্মাণ কাজের ডিজাইন করেছেন বুয়েটের স্থাপত্যকলা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ক্যাথরিন গোমেজ।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ দেশীয় উপকরণ বাঁশ, কাঠ ও ছন দিয়ে নির্মিত হচেছ ৮০ফুট দৈর্ঘ্য ও ৫০ ফুট প্রস্থের এ মঞ্চ। মূল ছাউনি যেটি কুঁড়ে ঘরের আদলে নির্মিত হয়েছে সেটি দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ৩০ফুট বাই ২০ফুট। এখানে দাঁড়িয়ে পোপ ফ্রান্সিস বক্তব্য দেবেন। ১ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় সোহরোওয়ার্দী উদ্যানের শিশু পার্ক সংলগ্ন ভিআইপি গেট দিয়ে তিনি মাঠে আসবেন। বিশেষ ধরনের গাড়িতে চড়ে সমাবেশস্থলে এসে তিনি বিশেষভাবে নির্মিত গলি রাস্তা দিয়ে ভক্তদের সঙ্গে দেখা করে মঞ্চে যাবেন।

নির্মাণ কমিটির অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্রাদার বিজয় জানান, বর্তমান সরকারের সহায়তায় সমাবেশকে সফল করতে সিবিসিবির সভাপতি কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি রোজারিওর নির্দেশনায় ও বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গোমেজের নেতৃত্বে একাধিক কমিটি ও উপ-কমিটির সদস্যদের মাধ্যমে সামগ্রিক প্রস্তুতি এগিয়ে চলেছে।

তিনি জানান, এ অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সিবিসিবির সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন ক্যাথলিক চার্চের মাধ্যমে আমন্ত্রিত খ্রিষ্টান ক্যাথলিকরা সমাবেশে অংশ নেবেন। সমাবেশে এক লাখেরও বেশি ভক্ত যোগ দেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ঘোষিত সূচি অনুযায়ী, ৩০ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবেন পোপ ফ্রান্সিস।

৩০ নভেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন পোপ। তারপর রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন তিনি। এদিন অন্যান্য কূটনীতিকদের সঙ্গেও সৌজন্য বিনিময় করবেন পোপ ফ্রান্সিস।

সফরসূচি অনুযায়ী, ১ ডিসেম্বর এক গণমিছিলে অংশ নেবেন পোপ। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে তার। একইদিনে বিশপসহ অন্যান্য ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।

সফরের শেষ দিন ২ ডিসেম্বর মাদার তেরেসা পরিচালিত মিশনারিগুলো পরিদর্শন করবেন পোপ ফ্রান্সিস। অংশ নেবেন সেমিনারেও। সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ছাড়বেন তিনি।

উল্লেখ্য বাংলাদেশে ভ্যাটিক্যানের রাষ্ট্রদূত আর্চ বিশপ জর্জ কোচেরিও চলতি বছরের চলতি বছরের আগস্টে পোপের বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছিলেন।