সৌদি আরবের সঙ্গে মিসরকে বিদায় করে দ্বিতীয় রাউন্ডে উরুগুয়ে

আগেরদিনই ‘এ’ গ্রুপ থেকে সবার আগে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করেছিল স্বাগতিক রাশিয়া। মিসরকে ৩-১ গোলে হারিয়ে। তবে মিসরের বিদায় নিশ্চিত ছিল না তখন। মোহামেদ সালাহর দল তাকিয়েছিল সৌদি আরবের দিকে। সৌদি আরব যদি উরুগুয়েকে হারাতে পারে, তাহলে মিসরের একটা সুক্ষ সম্ভাবনা টিকে থাকবে।

কিন্তু কোনাটাই হলো না। লুইস সুয়ারেজের একমাত্র গোলে সৌদি আরবকে হারিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করে নিলো দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে। সে সঙ্গে সৌদি আরব এবং মিসর- মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশকেই একসঙ্গে বিদায় করে দিলো উরুগুইয়ানরা। এছাড়া ১৯৫৪ বিশ্বকাপের পর ৬৪ বছর বিরতি দিয়ে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে টানা দুটি ম্যাচ জিততে পারলো উরুগুয়ে।

হারলেই বিদায়। এমন সমীকরণ নিয়ে উরুগুয়ের মুখোমুখি হয়েছিল সৌদি আরব। প্রথম ম্যাচে রাশিয়ার কাছে ৫ গোল হজম করার পর অবশ্য মানসিকভাবেও বেশ পিছিয়ে সৌদির ফুটবলাররা। অন্যদিকে সৌদিকে কোনোমতে হারাতে পারলেই, রাশিয়ার পর দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকিট নিশ্চিত উরুগুয়ের। এমন পরিস্থিতিতে রোস্তভ এরেনায় সৌদি আরবকে ১-০ গোলে হারিয়েছে লুইস সুয়ারেজের দল উরুগুয়ে।

মিসরের বিপক্ষে খুবই বাজে পারফরম্যান্স দেখান উরুগুয়ের বার্সা তারকা লুইস সুয়ারেজ। যে কারণে বেশ সমালোচনার শিকারও হতে হয় তাকে। তবে সব সমালোচনাকে পাশ কাটিয়ে ঠিকই সৌদি আরবের বিপক্ষে জ্বলে উঠলেন তিনি। করলেন প্রথমার্ধের একমাত্র গোল। একই সঙ্গে নিজের শততম আন্তর্জাতিক ম্যাচাটাকেও সুয়ারেজ রাঙিয়ে রাখলেন গোল করে। একই সঙ্গে টানা তিনটি বিশ্বকাপে গোল করলেন তিনি।

ম্যাচের ২৩তম মিনিটেই গোল করে উরুগুয়েকে এগিয়ে দিলেন সুয়ারেজ। কার্লোস সানচেজের ক্রস থেকে ভেসে আসা বলটিতে মাথা চোঁয়ানোর জন্য কয়েকজন লাফিয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু সবাইকে ফাঁকি দিয়ে বল চলে আসে একেবারে ডানপ্রান্তে দাঁড়ানো সুয়ারেজের পায়ে। ডিফেন্ডার আল ওয়াইজ সুয়ারেজকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেও থামাতে পারেননি। আলতো শটে বার্সা তারকা মুহূর্তের মধ্যেই বলটা জড়িয়ে দেন সৌদি আরবের জালে। ১-০ গোলে এগিয়ে গেলো উরুগুয়ে।

ভালো খেলেও আজ হারলো সৌদি আরব। রাশিয়ার বিপক্ষে যদি অন্তত এই খেলাটি খেলতে পারতো, তাহলে এতগুলো গোল হজম করতে হতো না। বল পজেশনে উরুগুয়ের চেয়ে এগিয়েই ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। সৌদি আরবের ছিল ৫৩ ভাগ। উরুগুয়ের ৪৭ ভাগ। কিন্তু একা এক সুয়ারেজই ব্যবধানটা গড়ে দিলেন।

আগের ম্যাচ হেরে যাওয়ার কারণে সৌদি আরব ছিল শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক। শুরু থেকেই উরুগুয়ের রক্ষণে চাপ সৃষ্টি করে তারা। কিন্তু গোল আদায় করতে ব্যর্থ হয়। উরুগুয়ের দুই ডিফেন্ডার দিয়েগো গোডিন এবং হোসে গিমেনেজকে দারুণ ব্যস্ত রাখেন সৌদি স্ট্রাইকাররা। ৮ম মিনিটেই আল-বুরায়েক ফ্রি কিকে চেষ্টা করেছিলেন উরুগুয়ের ডিফেন্স ভাঙার। কিন্তু কোনো কাজ হলো না। বল চলে যায় উপর দিয়ে।

১৩ মিনিটে ক্যাসেরেসের কাছ থেকে বল পেয়ে হাফভলি নেয়ার চেষ্টা করেন এডিনসন কাভানি। কিন্তু রক্ষণের দেয়ালে লেগে সেই বল ক্লিয়ার হয়ে যায়। বেঁচে যায় সৌদি আরব। ১৭ মিনিটে দারুণ এক ফ্রি-কিক পেয়েছিল সৌদি আরব। একেবারে পেনাল্টি এরিয়ার সামনে। কিন্তু সেটি কাজে লাগাতে পারেনি তারা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই উরুগুয়েকে দারুণ চাপে রাখে সৌদি আরব। শুরু থেকেই একের পর এক আক্রমণে ব্যস্ত রাখে সুয়ারেজদের রক্ষণকে। কিন্তু কোনো সুযোগকেই তারা ফিনিশিংয়ে নিতে পারছিল না। উল্টো সুয়ারেজ-কাভানি কয়েকটা কাউন্টার অ্যাটাক করলেও কোনো কাজে আসেনি তাদের। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের জয়েই শেষ করলো উরুগুয়ে।