স্কুলে বাবা অপমানিত, বাসায় ভিকারুননিসা শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা!

নিজের সামনে বাবাকে অপমান করেছেন স্কুলের শিক্ষকরা। তা সইতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়েছে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ভিকারুননিসা স্কুলের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারী। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রি। মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল (ঢামেক) কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আতাউর রহমান জাগো নিউজকে জানান, আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থীর সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হচ্ছে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হবে।

নিহতের বাবা দিলীপ অধিকারী একজন সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী। ঢামেকে তিনি সাংবাদিকদের জানান, অরিত্রির স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। গতকাল রোববার সমাজবিজ্ঞান পরীক্ষা চলার সময় তার কাছে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। এজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের ডেকে পাঠায়। সোমবার স্কুলে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়, অরিত্রি মোবাইল ফোনে নকল করছিল, তাই তাকে বহিষ্কারের (টিসি) সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার মেয়ের সামনে আমাকে অনেক অপমান করে। এই অপমান এবং পরীক্ষা আর দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আজ দুপুরে বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রি। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত অরিত্রির গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায়। সে পরিবারের দুই বোনের মধ্যে বড় ছিল।

এ ঘটনায় রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস বলেন, ক্লাসে মেয়েটা মোবাইল ফোনে পুরো বই কপি করে নিয়ে এসেছিল। দায়িত্বরত শিক্ষক তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। পরে শাখা প্রধান জিন্নাত আরার কাছে বিষয়টির অভিযোগ করেন ওই শিক্ষক। এরপর তার অভিভাবককে ডাকা হয়। কিন্তু অভিভাবককে অপমান করা হয়নি। এই অভিযোগ মিথ্যা।

তিনি বলেন, নিহত শিক্ষার্থীর অভিভাবককে তখন বলা হয়, আপনারা সন্তানকে কী শিক্ষা দিচ্ছেন, দেখাশোনা করেন না। নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়। যেহেতু মেয়েটি আমাদেরই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় (নকলের) আমরাই দুঃখিত ছিলাম ।

আত্মহত্যা করার বিষয়ে নাজনীন ফেরদৌস, ঘটনাটি দুঃখজনক। কাম্য নয়। এ খবর শোনার পর আজ রাতেই জরুরিভাবে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে মিটিং করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা ওই পরিবারের জন্য কী মানবিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি তাই ভাবছি। মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।