‘স্টাইল’ করে চুল কাটলেই ৪০ হাজার টাকা জরিমানা!

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মডেলদের অনুকরণে স্টাইল করে চুল, দাড়ি ও গোঁফ কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলামের নির্দেশে নাপিতদের সমিতি থেকে (শীল সমিতি) এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে অভিযুক্ত শীল সদস্যকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ছাত্র ও উঠতি বয়সের যুবকসহ যে কারও মডেলিং স্টাইলে চুল কাটাসহ দাড়ি ও গোঁফ রঙ না করার বিষয়ে শীল সদস্যদের ডেকে নিয়ে সতর্ক করে দেন ভূঞাপুর থানার ওসি। পরে উপজেলা শীল সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত একটি নোটিশের মাধ্যমে সব সদস্যকে এ বিষয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়।

উপজেলা শীল সমিতির উপদেষ্টা অখিল চন্দ্র শীল বলেন, ‘ওসি মহোদয়ের নির্দেশনায় আমরা স্টাইল করে চুল, দাড়ি ও গোঁফ কাটা বন্ধ করে দিয়েছি। কয়েকদিন আগেও ছাত্র ও যুবকেরা স্টাইল করে চুল কাটাতো। এখন তারা স্বাভাবিকভাবেই চুল কাটাচ্ছে।’

ভূঞাপুর উপজেলা শীল সমিতির সভাপতি শেখর চন্দ্র শীল বলেন, ‘থানার ওসি মহোদয় আমাদের ডেকে নিয়ে ছাত্র ও উঠতি বয়সের যুবকসহ সবার স্টাইল করে চুল, দাড়ি ও গোঁফ কাটা এবং চুলে রঙ না করার বিষয়ে সতর্ক করে দেন। এছাড়া, হেয়ার স্টাইলের কোনো ক্যাটালগ দোকানে না রাখতেও বলেন তিনি। পরে তার নির্দেশনায় আমরা উপজেলা শীল সমিতির আওতায় থাকা সব সদস্যকে নোটিশের মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেউ এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে তাকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্টাইলে চুল কাটার বিষয়ে প্রায় সময়ই ছাত্র ও যুবকদের অভিভাবকেরা আমার কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করতেন। ছাত্র ও যুবকেরা স্টাইলে চুল কেটে বখাটেদের মতো ঘুরে ফেরে। এতে তারা সমাজের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তাদের দেখতেও অনেকটা বেমানান লাগে। পরে অভিভাবক, শিক্ষক ও উপজেলা শীল সমিতির সভাপতিসহ সমিতির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্টাইলে কেউ চুল কাটাসহ দাড়ি ও গোঁফে রঙ করলে জরিমানাসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে ওসির সঙ্গে কথা না বলে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম বলেন, ‘আমি নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত, আমার বিষয়টি জানা নেই।’ ওসির এই সিদ্ধান্তকে আপনি কীভাবে দেখছেন– এমন প্রশ্নে তিনি কোনো উত্তর দিতে রাজি হননি।