স্ত্রীকে বোন পরিচয়, ভুয়া মেজর সেজে একাধিক বিয়ে

ফেসবুকে নিজেকে মেজর সাজিয়েছেন। তারপর টার্গেট করে মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলেন। কাউকে চাকরি বা নানা সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে সম্পর্ক তৈরি করে। এরপর নানা কায়দায় টাকা হাতিয়ে নেন।

এখানেই শেষ নয়। তারপর স্বশরীরে মেয়ের পরিবারের কাছে হাজির। সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব। মেয়ে হিন্দু পরিবারের হলে, নিজেকে হিন্দু ধর্মালম্বী বলেই পরিচয় দেয়। পরিবার বলতে নিজের স্ত্রী মেঘলাকে বোন পরিচয় করিয়ে দেয় এই ভুয়া মেজর জাহিদ ওরফে সমির।

আশুলিয়ায় এক ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার (১৫ জুন) সকালে র‌্যাব-৪ এর একটি দল সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে তাকে। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানায়। বর্তমানে তার স্ত্রী মেঘলাকে নিয়ে টাঙ্গাইলের কালীহাতি থানার অস্তিপাড়া গ্রামে বসবাস করে আসছিলেন তিনি।

আশুলিয়ার ওই ভুক্তভোগী নারী জানান, তার সঙ্গে মেজর সেজে ফেসবুকে পরিচয় হয় জাহিদের। পরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা নেয় তিনি। তবে দীর্ঘ দিন কেটে গেলেও চাকরির কোনও খবর নেই। পরে হঠাৎ একদিন বাসায় উপস্থিত হয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেয় ও নিজেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীর বলে জানায়। বাবা পুলিশ কমিশনার। দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। মা মানসিকভাবে অসুস্থ। তাই মেঘলা নামে এক নারীকে নিজের বোন পরিচয় দিয়ে বিয়ের কথা বলে। গত বছরের ২৫ নভেম্বর হিন্দু ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসারে বিয়ে হয়। সাভারে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকি। জাহিদ মাঝে মধ্যে রাতে আসতো, আবার ভোরে চলে যেতে। এর মধ্যে আমি জানতে পারি, জাহিদ ভুয়া মেজর ও মুসলিম ধর্মাবলম্বী। এছাড়া সে একইভাবে প্রতারণা করে দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক বিয়ে করেছে ও টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার এস আই কামরুল ইসলাম জানান, শনিবার দুপুরে ভুয়া মেজর জাহিদকে আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালত আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে ভুক্তভোগী নারী ও পরিবার যোগাযোগ করছে। তাদের প্রতারিত হওয়ার ঘটনা তুলে ধরছে। পাশাপাশি ভুয়া মেজর জাহিদের স্ত্রী মেঘলাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। কারণ এই প্রতারণার সঙ্গে মেঘলা জড়িত রয়েছেন। কারণ স্ত্রী মেঘলাকে প্রেমের ক্ষেত্রে ও অন্য নারীকে বিয়ের সময় তার বোন বলে পরিচয় করিয়ে দিতেন জাহিদ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় প্রতারণার মামলা দায়ের করেছেন।