স্বজনদের আর্তনাদে ভারি আর্মি স্টেডিয়াম

ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে নিহতদের স্বজনদের আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠছে ঢাকা আর্মি স্টেডিয়াম। গোটা স্টেডিয়াম যেন শোকের আবহে ঢেকে গেছে। এর আগে প্রিয়জনের লাশ নিতে স্টেডিয়ামের ৪নং গেইট দিয়ে একে একে সবাই ভেতরে প্রবেশ করছেন।

নিহত ফার্স্ট অফিসার পৃথূল রমীদের মা মাহফুজা, বাবা কাজল, বড় খালা ফিরোজা আক্তার বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে আর্মি স্টেডিয়ামে আসেন। তারা সবাই কাঁদছিলেন।

নিহতের মামা বৈমানিক সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, নিহত পৃথূলার জানাজা বাদ মাগরিব শ্যামলী আশা টাওয়ারে হবে। এরপর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
নিহত ইউএস-বাংলার ক্রেবিন ক্রু খাজা হোসেনের খালা সূরাইয়া মনিরা ও শাশুড়ি ফৌজিয়া রহমান এসেছেন আর্মি স্টেডিয়ামে। তারাও বাকরুদ্ধ। নিহতের স্ত্রী সাদিয়া রহমানও ইউএস-বাংলায় চাকরি করেন। তাদের বিয়ে হয়েছিল এক বছর দুই মাস আগে।

নিহত খাজার জানাজার পর বেগম বাজারে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
রাজশাহীর নজরুল ইসলাম ও আখতার বেগম দম্পতিও নিহত হয়েছেন ওই দুর্ঘটনায়। আখতার বেগমের মরদেহ আসলেও স্বামী নজরুলের মরদেহ কবে আসবে কেউ এখনো নিশ্চিত নন।

আখতার বেগমের মরদেহ গ্রহণের জন্য তার দুই মেয়ে কাকন ও কনা এবং নিহতের খালাতো বোন মিনারা বেগম ও ভাগ্নে সাকিব এসেছেন। তারা জানিয়েছেন, মরদেহ রাজশাহী উপশহরে নিয়ে যাওয়া হবে আজই।

ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানের বেয়াই মো. আলীউর রহমান শেখ এসেছেন তার মরদেহ গ্রহণের জন্য। নিহতের পরিবারের অনেকেই অসুস্থ থাকায় তিনি তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে এসেছেন স্টেডিয়ামে। তিনি জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর কবরস্থানে আবিদকে দাফন করা হবে।

ক্রেবিন ক্রু শারমিন আক্তার নাবিলার লাশ রহিম মেটাল জামে মসজিদে কবরস্থানে দাফন করা হবে বাদ মাগরিব। নাবিলার ননদ ফাতেমা আলম একথা জানিয়েছেন। নিহত নাবিলার স্বামী হাসান ইমাম এবং মেয়ে হিয়া (২) লাশ নিতে এসেছেন স্টেডিয়ামে।

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ ৬৭ জন যাত্রী ও চার ক্রু নিয়ে বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজটি। এতে মারা যান ৫১ জন। বিমানে বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন ৩৬ জন। তাদের মধ্যে ২৬ জন নিহত হন যাদের ২৩ জনের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে।