৭ মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়ে ইউনেস্কোই সম্মানিত হয়েছে : জাফর ইকবাল

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐহিত্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ইউনেস্কোই সম্মানিত হয়েছে বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নাগরিক সমাবেশে তিনি ১৯৭১ সালের ওই ভাষণটিকে পৃথিবীর সেরা ভাষণ হিসেবে বর্ণনা করেন।

শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন প্রখ্যাত এই শিক্ষক, শিক্ষাবিদ।

এই নাগরিক সমাবেশে আওয়ামী লীগ ও সমমনা দল ছাড়াও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ যোগ দেয়।

জাফর ইকবাল বলেন, “কখনও কখনও আমরা ভালো কাজের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে পুরষ্কৃত করে সম্মানিত করি। কখনও কখনও পুরষ্কার গ্রহণ করে তারা আমাদেরকে সম্মানিত করেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়ে ইউনেস্কোও একইভাবে সম্মানিত হয়েছে। তারা বলতে পারবে, ‘পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণটি এখন আমাদের কাছে রয়েছে’।”

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম-এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম খ্যাত ভাষণটিকে পৃথিবীর সেরা ভাষণ বলে মনে করেন জাফর ইকবাল। তিনি বলেন, পৃথিবীতে অনেক সুন্দর সুন্দর বক্তব্য আছে। কিন্তু সেগুলো লিখিত। লিখে নিয়ে এসে এসব বলে গেছেন বক্তারা। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ ছিল অলিখিত। তাই এটা সেরা।’

আমাদের যা যা আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে-বঙ্গবন্ধুর সেই বক্তব্য এখনও আবেদন হারায়নি বলে মনে করেন জাফর ইকবাল। বলেন, এখন সেই শত্রু নেই, এখন তৈরি হয়েছে নতুন শত্রু। লেখক তার লেখনি দিয়ে, গায়ক তার গলা দিয়ে, শিল্পী তার তুলি দিয়ে এই শত্রুর মোকাবেলা করবে। আর সবার মোকাবেলার মধ্য দিয়েই আমরা একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলব।

এসময় তিনি বলেন, ইউনোস্কো বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়ে নিজেদের সম্মানিত করেছে

৭ মার্চের ভাষণের স্মৃতিচারণ করে এই শিক্ষাবিদ বলেন, সেই দিনের কথা কেবল জানলে হবে না, উপলব্ধি করতে হবে। সেদিন আকাশে হেলিকপ্টার হটল দিচ্ছিল, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী প্রস্তুত ছিল, একটি সুযোগ পেলে তারা আমাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ত। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেদিন কৌশলে জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করে তার দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।

বঙ্গবন্ধুকে বাঁচিয়ে না রাখতে পারার দুঃখ সব তাড়িয়ে বেড়াবে বলেও মন্তব্য করেন জাফর ইকবাল। বলেন, ‘পৃথিবীতে খুব কম দেশেই আছে যেখানে দেশ ও একজন নেতা সমার্থক। আমরা সেই সৌভাগ্যবান জাতি, যেখানে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক।’

বাংলাদেশের প্রকৃত নাগরিক হতে হলে স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে হবে বলেও মন্তব্য করেন জাফর ইকবাল। মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনী ‘জয় বাংলা’ বলে বক্তব্য শেষ করেন তিনি।