হকিংকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে নেইমার!

বিতর্ক-সমালোচনা আর নেইমার যেন একসূত্রে গাথা। ইতিবাচক বা নেতিবাচক, যাই করুণ, তার সেই কর্ম নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠবে, এটাই যেন নিয়তি! ফুটবল মাঠের কর্মকাণ্ডে হরহামেশাই সমালোচনার ঝড়ের মুখে পড়েন নেইমার। নিয়তির সেই ধারাবাহিকতায় পিএসজির ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিশ্বখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংকে শ্রদ্ধা জানিয়েও!

নেইমারকে বিতর্কের মুখে ঠেলে দিয়েছে আসলে হকিংকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ব্যবহার করা ছবিটা! ৭৬ বছরের জীবনের ৫৪টি বছরই স্টিফেন হকিংকে কাটাতে হয়েছে যন্ত্রচালিত হুইলচেয়ারে বসে। সেই ২২ বছর বয়সেই স্টিফেন হকিংয়ের শরীরে বাসা বাঁধে দুরারোগ্য মটর নিউরন ব্যাধি। যে রোগ তার শরীরটাকে করে দেয় অক্ষম। সেই থেকেই যন্ত্রচালিত হুইলচেয়ার হয়ে উঠে তার জীবন পথের একমাত্র মাধ্যম।

এই শারীরিক অক্ষমতাও তাকে দমিয়ে রাখতে পারেননি। কর্মগুণে ইংলিশ এই বিজ্ঞানী জয় করেন দুনিয়া। ‘আ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’-গ্রন্থের প্রণেতা সেই স্টিফেন হকিং বুধবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মহাকালের অন্যতম সেরা এই পদার্থবিদের মৃত্যুতে পুরো বিশ্ব স্তম্ভিত। হকিংয়ের মৃত্যু শোক ছুঁয়েছে নেইমারের হৃদয়ও।

তাই প্রয়াত এই বিজ্ঞানীকে নেইমার শ্রদ্ধা জানান একটা ইনস্টাগ্রামে একটা ছবি পোস্ট করার মাধ্যমে। হুইলচেয়ারে বসে থাকলেও হকিংয়ের মুখে সব সময়ই লেগে তাক হাসি। হকিংয়ের সেই ছবিটাই কল্পনা করে নেইমারও শ্রদ্ধা জানান সেই ভঙ্গিতেই। হুইলচেয়ারে বসে হাস্যোজ্বল মুখে ছবি তুলে পোস্ট করেন ইনস্টাগ্রামে। ছবিটা তিনি তুলেছেন আবার উদোম গায়ে। ছবির ক্যাপশনে নেইমার জুড়েও দেন হকিংয়ের একটা উক্তি।

তবে ক্যাপশন নয়, পিএসজি তারকাকে তীব্র সমালোচনার মুখে ফেলে দিয়েছে পোস্ট করা ছবিটাই। টুইটার, ইনস্টাগ্রামসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে বয়ে যাচ্ছে সমালোচনার ঝড়। কেউ কেউ বলছেন, নেইমারের মধ্যে নীতি-নৈতিকতা বলতে কিছু নেই। কেউ বলেছেন, এভাবে হুইলচেয়ারে বসে ছবি তুলে নেইমার আসলে বিজ্ঞানী হকিংকে অসম্মান করেছেন! কেউ বা বলেছেন, এর মাধ্যমে নেইমার আসলে নিজেকে হকিংয়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন!

চোট নেইমারকে ছিটকে ফেলেছেন মাঠের বাইরে। পায়ের অস্ত্রোপচারের পর তারও এখন সময় কাটছে হুইলচেয়ারে বসে! কেউ কেউ এ নিয়েও খোঁচা দিয়েছেন। একজন যেমন লিখেছেন, ‘নেইমার শুনেছেন যে, একজন বিখ্যাত মানুষ মারা গেছে। যিনি জীবনের বেশির সময় হুইলচেয়ারে কাটিয়েছেন। সে হয়তো ভেবেছে, আমিও একজন বিখ্যাত ফুটবলার। আমারও এখন সময় কাটছে হুইলচেয়ারে। ওই মানুষটার জীবনই এখন আমি কাটাচ্ছি।’

অন্য আরেকজন লিখেছেন, ‘নেইমারের ক্ষণস্থায়ী হুইলচেয়ারের জীবন হকিংয়ের হুইলচেয়ারের জীবনের তুলনার কিছুই না।’ আরেকজন অসভ্য বলেও গালি দিয়েছেন, ‘সহানুভূতি, সভ্যতার নাম গন্ধও নেই নেইমারের মধ্যে।’ একজন তো সরাসরিই অভিসম্পাত বর্ষণ করেছেন, ‘কোনো আক্কেল নেই, সমবেদনা নেই। নেইমার নিঃস্ব হয়ে যাক।’

ভুল স্বীকার করে নেইমার পোস্ট থেকে ছবিটা দ্রুত সরিয়ে ফেললেই বোধ হয় ভালো করবেন!