হঠাৎ আইসিইউতে মুক্তামনি

হঠাৎ করেই আইসিইউতে মুক্তামনিকে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৯টার পর থেকে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে ডাক্তাররা তাকে দ্রুত নেবুলাইজার ব্যবহার করান। রক্তনালীতে টিউমারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে মুক্তামনি।

ডাক্তারদের বরাত দিয়ে মুক্তামনির বাবা মো. ইব্রাহিম হোসেন জানান, রাত ৯টার দিকে অসুস্থ হলে গ্যাস দেয়ার পর কিছুক্ষণ সুস্থ থাকলেও রাত সাড়ে ১২টার দিকে আর আবার শ্বাসকষ্ট বেশী দেখা দেয়। সাথে সাথে কর্তব্যরত ডাক্তারদের পরামর্শ মতে তাকে আইসিইউতে নিয়ে যায়। এখন তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন-এর তত্ত্বাবধানে মুক্তামনির চিকিৎসা চলছে। রক্তনালীতে টিউমারে আক্রান্ত মুক্তামনির হাতে কয়েক দফা অস্ত্রোপচারের পর তার অর্ধেক হাতে চামড়া প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আর সপ্তাহ খানেক পর বাকি অংশে চামড়া প্রতিস্থাপনের কথা রয়েছে।

সাতক্ষীরার সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের মুদি দোকানি ইব্রাহীম হোসেনের মেয়ে মুক্তামনি (১২)। জন্মের দেড় বছর পর মুক্তামনির হাতে একটি ছোট মার্বেলের মতো গোটা দেখা দেয়। এরপর থেকে সেটি বাড়তে থাকে।

দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়েও তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। তার আক্রান্ত ডান হাত এখন ছোট আকারের গাছের গুড়ির রূপ নিয়ে প্রচণ্ড ভারী হয়ে উঠেছে। এতে পচনও ধরেছে। পোকাও জন্মেছে। দিন রাত চুলকানি ও যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে থাকে মুক্তামনি। আক্রান্ত স্থান থেকে বিকট দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

এ রোগ তার দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা। এসব কারণে তাদের বাড়িতে আত্মীয় স্বজন ও পড়শিদের যাতায়াতও এক রকম বন্ধ হয়ে গেছে।

মুক্তামনির এ বিরল রোগ নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই তাকে ঢাকায় পাঠিয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

গত ১১ জুলাই মুক্তামনিকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে ৬০৮ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের অপারেশন থিয়েটারে শনিবার (৫ আগস্ট) তার বায়োপসি সম্পন্ন হয়। বায়োপসি রিপোর্টে তার রক্তনালীতে টিউমার ধরা পড়ে। যা অপসারণে মূল অপারেশন চলছে।