হতাশা থেকে আত্মহত্যা করেছিলেন রাউধা : পিবিআই

রাজশাহীর ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী মালদ্বীপের নাগরিক ও মডেল রাউধা আতিফ আত্মহত্যা করেছিলেন বলে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেমিকের প্রতারণা তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছিল।

পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান বুধবার রাজশাহীর আদালতে এই ঘটনায় হওয়া মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এতে বলা হয়, রাউধাকে কেউ হত্যা করেনি।

এসআই সাইদুর বলেন, প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় রাউধা চরম হতাশায় ভুগছিলেন। আর এ কারণেই তিনি আত্মহত্যার পথে গিয়েছিলেন। প্রেমিকের সঙ্গে কথোপকথন ও ছবি থেকে পিবিআই যেসব প্রমাণ পেয়েছে তাতে তার আত্মহত্যার বিষয়টিই উঠে এসেছে।

২০১৭ সালের ২৯ মার্চ ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাউধাকে (২০) তার কক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেও হোয়াটস অ্যাপে প্রেমিক শাহি ঘনির সঙ্গে হোয়াটস অ্যাপে কথা বলেছিলেন রাউধা। সর্বশেষ মেসেজে লিখেছিলেন, “তুমি আমাকে মেরে ফেললে”।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, মালদ্বীপের নাগরিক শাহি ঘনি বর্তমানে লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজে মলিকুলার বায়োলজি এন্ড প্যাথোলজি অব ভাইরাসেস ডিপার্টমেন্টের পড়ালেখা করছেন। মৃত্যুর চার মাস আগেও তারা দুজন ভারতে প্রায় দুই সপ্তাহ একসঙ্গে ছিলেন। রাউধার ফোন, ল্যাপটপে পাওয়া ছবি, হোয়াটস অ্যাপ ও ফেসবুকে ১৭ হাজার পৃষ্ঠা কথোপকথন বিশ্লেষণ করে তাদের সম্পর্কের উত্থান-পতনের কথা জেনেছে পিবিআই।

পিবিআই কর্মকর্তা বলেন, আত্মহত্যার আগের রাতে শাহির ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ঢুকেছিলেন রাউধা। শাহি যে তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে, সেটি তিনি সেদিনই নিশ্চিত হন। সে রাতেই রাউধা ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার প্রথম চেষ্টা চালান। কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে ওই দফায় তাকে বিপদমুক্ত করা হয়। রাউধার বিছানায় ইঁদুর মারা বিষও পেয়েছে পিবিআই। তবে তিনি সেটি ব্যবহার করেননি।

পরদিন ভোরে শাহিকে রাউধা লিখেন, “আমি শুধু তোমাকেই ভালোবেসেছি, কিন্তু তুমি কখনোই আমাকে ভালোবাসোনি। তুমি খুব ভয়ঙ্কর মানুষ। যে ক্ষতি তুমি করেছ তা পূরণ হবার নয়। আর কিছুই অবশিষ্ট নেই… আমি নিঃস্ব, মৃত বোধ করছি।”

দুপুর আড়াইটায় সর্বশেষ মেসেজে রাউধা লিখেন, “তুমি আমাকে খুন করেছ।” এর পরই কোনো একসময় আত্মহত্যা করেন তিনি।