হবিগঞ্জে ভাইকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে চুবিয়ে মারে বাবা

হবিগঞ্জের বাহুবলে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ভাইকে ফাঁসাতে নিজের শিশু সন্তানকে হত্যা করেছে পাষণ্ড বাবা ফরিদ মিয়া (৪৫)।

সোমবার বিকালে অতিরিক্ত চিপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর আক্তারের আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে তিনি এসব তথ্য জানান।

গত বছরের ৯ আগস্ট উপজেলার সুয়াইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী নাঈমা আক্তারের লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্র জানায়, উপজেলার সোইয়া গ্রামের ফরিদ মিয়ার (৪৫) সঙ্গে তার বড় ভাই শুকুর মিয়ার (৫৫) সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। একপর্যায়ে শুকুর মিয়া ও তার ছেলেরা ফরিদ মিয়াকে মারধর করে। ফরিদ মিয়ার স্ত্রীও প্রায় চার বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। ফরিদ মিয়ার দুই মেয়ে এক ছেলেকে নিয়ে কোনো রকম সংসার চালিয়ে আসছিল।

বড় ভাইয়ের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে একই গ্রামের পাশের বাড়ির সম্রাট মিয়ার ছেলে সাজন মিয়াকে (২০) নিয়ে ভাইকে ফাঁসাতে ফন্দি আঁটে। একপর্যায়ে তার ছোট মেয়ে নাইমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

পরদিন দুপুরে মেয়ে নাইমা স্কুল থেকে বাড়ি এসে থালাবাসন ধুতে পুকুরঘাটে যায়। পরে সাজন ও বাবা ফরিদ মিয়া পুরাতন একটি মশারি নিয়ে পুকুরঘাটেই শিশু নাইমার মুখ চেপে ধরে পুকুরের কিনারায় ঝোপের নিচে পানিতে চুবিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে নাইমার ওপর পুকুরের পানা দিয়ে চলে আসে।

পরে তার ভাইয়ের পরিবারের ছয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার দীর্ঘ ১০ মাস তদন্ত শেষে এই লোমহর্ষক ঘটনা বেরিয়ে আসে।

বাহুবল মডেল থানার ওসি মো. মাসুক আলী বিষয়গুলোর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পাশের বাড়ির সাজন মশারি দিয়ে মুখ চাপা দেয় আর ফরিদ মিয়া মেয়ের পা ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে।