হলি আর্টিজান হামলায় অভিযুক্ত জীবিত ৮ জন কারা?

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনায় আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ডিআইজি মনিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘প্রচলিত আইন অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে চার্জশিট আদালতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তকালে ঘটনার সঙ্গে ২১ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছি, তাদের মধ্যে গুলশান হামলায় সরাসরি অভিযানে অংশ নেয়া ৫ জন ওইদিনই অভিযানে নিহত হন। পরবর্তী সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে আরও ৮ জন নিহত হন।’

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন সময় নিহত এই ১৩ জন বাদে আমরা জীবিত আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছি। তাদের মধ্যে ৬ জন গ্রেফতার আছেন, বাকি দু’জনকে পলাতক দেখিয়ে আদালতে ওয়ারেন্ট অব অ্যারেস্টের আবেদন জানানো হয়েছে।’

চার্জশিটের আটজন কারা?

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, জীবিত যাদের নাম দিয়ে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে, তারা হলেন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগান, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র‍্যাশ, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, হাদিসুর রহমান সাগর, পলাতক মামুনুর রশিদ রিপন ও শহীদুল ইসলাম খালেদ।

গুলশান হামলায় সম্পৃক্ত নিহত ১৩ জনের পরিচয়:

মনিরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন অভিযানে নিহত যে ১৩ জনের গুলশান হামলায় সম্পৃক্ততা মিলেছে, তারা হলেন তামিম চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, সারোয়ার জাহান, বাসারুজ্জামান চকলেট, তানভীর কাদেরী, তারেক রায়হান, ছোট মিজান, মেজর জাহিদুল ইসলাম, গুলশানে হামলার পর অভিযানে নিহত পাঁচ জঙ্গি রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিরবাস ইসলাম, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল।

তিনি বলেন, ‘তদন্তে দেখা গেছে, আসামিরা পাঁচ মাস আগে থেকেই হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। হামলার উদ্দেশ্য ছিল দেশকে অস্থিতিশীল করা, বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি রাষ্ট্র বানানো, সরকারকে চাপের মুখে ফেলা।’

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ দেশি-বিদেশি ২২ নাগরিক প্রাণ হারান। তাদের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশি, একজন ভারতীয়, নয়জন ইতালীয় এবং সাতজন জাপানি নাগরিক।

প্রায় ১২ ঘণ্টার ওই ‘জিম্মি সংকট’ শেষ হয় সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ দিয়ে।

অভিযানে পাঁচ জঙ্গি ও রেস্টুরেন্টের বাবুর্চি সাইফুল ইসলাম চৌকিদার নিহত হন।

ওই ঘটনার পরই দেশব্যাপী জঙ্গিবিরোধী অভিযান জোরদার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসব অভিযানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় সরাসরি জড়িত হিসেবে চিহ্নিত ২১ জনের মধ্যে বিভিন্ন সময় ১৩ জন নিহত হয়।