হলুদ দাঁত সাদা করবেন যেভাবে

নিজেকে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করতে শুধু সুন্দর চেহারার অধিকারী হতে হবে এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। এর জন্য আপনার ঝকঝকে দাঁতের মুক্তো ঝরা হাসিই যথেষ্ট।

কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের পাশাপাশি দাঁতেরও ক্ষয় হয়। জিনগত কারণ, ভালো করে দাঁত পরিষ্কার না করা, মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণ চা- কফি পানে দাঁত হলুদ হয়ে যায়। আর দাঁতের রঙ হলুদ হলে অনেকেই হীনমন্যতায় ভোগেন। ভাঁটা পড়ে আত্মবিশ্বাসেও।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৮ জনেরই দাঁত সাদা নয়, বরং হলদে বর্ণের হয়। বেশি মাত্রায় সিগারেট বা তামাক সেবন করলেও দাঁত হলুদ হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় বিশেষ কোনো অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাবে এবং আবহাওয়ার কারণেও দাঁতের এমন হাল হয়।

তবে দাঁতের হলুদভাব কমিয়ে পুনরায় উজ্জ্বল সাদা করে তুলতে আধুনিক পদ্ধতির সাহায্য নেয়া যেতেই পারে। কিন্তু সেটা হবে ব্যয়বহুল। তাই একেবারে কম খরচে দাঁত ঝকঝকে সাদা করার কয়েকটি ঘরোয়া উপায় আছে। সেগুলো মেনে চললে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে সুফল পেতে শুরু করবেন।

দাঁতের হলুদভাব কমাতে যে যে পদ্ধতিগুলি খুব কাজে আসে, সেগুলি নিম্নে দেয়া হলো:

খাবার সোডা: দাঁতের হলুদভাব কাটাতে খাবার সোডার কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে টুথপেস্টের সঙ্গে অল্প করে বেকিং সোডা মিশিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন। তারপর গরম পানি দিয়ে ভালো করে কুলকুচি করে মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ১-২ বার এই ঘরোয়া পদ্ধতি কাজে লাগালে দারুন উপকার পাবেন।

এছাড়া খাবার সোডার সঙ্গে অল্প করে লেবুর রস এবং সাদা ভিনিগার মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিন। এই পেস্টটি দিয়ে দাঁত মাজলেও সমান উপকার পাবেন।

কমলা লেবু: প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কমলা লেবুর ফালি নিয়ে দাঁতে ঘষুন। এমনটা করলেই দেখবেন সমস্যা কমে যাবে। এ ফলটিতে উপস্থিত ভিটামিন-সি এবং ক্যালসিয়াম রাতভর দাঁতে জমতে থাকা মাইক্রোঅর্গানিজিমের সঙ্গে লড়াই চালায়। ফলে দাঁতের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি ধীরে ধীরে হলদে আবরণও সরে যেতে শুরু করে।

স্ট্রবেরি: স্ট্রেবেরিতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি, যা এই ধরনের সমস্যা কমাতে দারুন কাজে আসে। এক্ষেত্রে কয়েকটি স্ট্রবেরিকে পিষে পেস্ট তৈরি করুন। তারপর সেই পেস্ট দাঁতে লাগান। এমনটা কয়েক সপ্তাহ করলেই দেখবেন হলদেভাব কমে গিয়ে দাঁত আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে।

লেবু: এই ফলটিতে উপস্থিত ব্লিচিং প্রপাটিজ দাঁতের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো লেবুর রসে অল্প করে নুন মিশিয়ে সেই রস দিয়ে মুখ কুলি করলে দাঁতের হলুদভাব কমে যেতে শুরু করে।

এছাড়া প্রতিদিন লেবু দিয়ে দাঁত ঘষুন। কয়েক সপ্তাহ টানা এমনটা করলেই দেখবেন সমস্যা কমতে শুরু করেছে।

নুন: দাঁতকে পরিষ্কার রাখতে সেই আদিকাল থেকে নুনের ব্যবহার হয়ে আসছে। আসলে এ উপাদানটি দাঁতের পুষ্টির ঘাটতি দূর করার পাশপাশি দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। এছাড়া বেকিং সোডার সঙ্গে নুন মিশিয়ে দাঁত মাজলেও সমান উপকার পাওয়া যায়।

তুলসি পাতা: বেশি করে তুলসি পাতা নিয়ে সেগুলিকে রোদে শুকিয়ে নিন। পাতাগুলো একেবারে শুকিয়ে গেলে তখন সেগুলি বেটে একটা পাউডার বানিয়ে ফেলুন। এই পাউডারের সঙ্গে টুথপেস্ট মিশিয়ে ব্রাশ করলে দাঁতের হলুদভাব একেবারে চলে যায়। সেই সঙ্গে পায়োরিয়া, ক্যাভিটিসহ আরও সব দাঁতের রোগের প্রকোপও হ্রাস পায়।

আপেল: প্রতিদিন আপেল খাওয়া শুরু করুন। তাহলেই দেখবেন দাঁতের হলুদভাব একেবারে কমে যাবে। আসলে এই ফলটিতে উপস্থিত একাধিক স্বাস্থ্যকর অ্যাসিড দাঁতের হলদেটে আবরণকে নিমিষে তুলে দিতে দারুন কাজে আসে।