হাফিজ সাইদের মুক্তি

মুম্বাই হামলার অন্যতম সন্দেহভাজন এবং লস্কর-ই-তৈয়বার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সাঈদকে মুক্তি দিয়েছে পাকিস্তান। আদালতের আদেশে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লাহোরের বাসভবন থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। খবর এনডিটিভি।

গৃহবন্দি অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার পরই কাশ্মির নিয়ে সুর চড়িয়েছেন এই জামাত প্রধান। সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, কাশ্মিরিদের মুক্তির জন্য পাকিস্তানের সব মানুষকে একত্র করবেন তিনি।

প্রায় ১০ মাস গৃহবন্দি অবস্থায় ছিলেন হাফিজ। মুক্তি পাওয়ার পরই কেক কেটে দিনটি উদযাপন করেন। তিনি বলেন, কাশ্মিরিদের হয়ে কথা বলার জন্য আমার কণ্ঠরোধ করতেই ১০ মাস গৃহবন্দি করে রাখা হয়।

তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি। ভারত বার বারই আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছে। কিন্তু লাহৌর হাইকোর্টের রিভিউ বোর্ডের সিদ্ধান্ত ফের প্রমাণ করে দিল যে আমি নির্দোষ।’

হাফিজের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বার বার সরব হয়েছে ভারত। মুম্বাই হামলার সঙ্গে হাফিজ জড়িত এমন তথ্য প্রমাণ পাকিস্তান সরকারের হাতে তুলে দিয়েছে নয়াদিল্লি। কিন্তু পাকিস্তান কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি হাফিজের বিরুদ্ধে। বরং ভারতের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলার কথা বলা হয়েছে।

হাফিজ বলেন, ‘ভারতের অনুরোধে আমেরিকা চাপ সৃষ্টি করেছে পাকিস্তানের উপর। আরে সে কারণেই পাক সরকার আমাকে গৃহবন্দি করেছে।’ মুক্তির দিন হাফিজের বাড়ির সামনে প্রচুর সমর্থক ভিড় জমিয়েছেন। জামাতের মুখপাত্র আহমেদ নাদিম পিটিআইকে জানান, নেতার মুক্তিকে খুব খুশি তারা।

গত ৩১ জানুয়ারি হাফিজ সইদ এবং তার চারসঙ্গী আবদুল্লা উবেইদ, মালিক জাফর ইকবাল, আব্দুল রহমান আবিদ এবং কাজী কাশিফ হুসেইনকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আটক করে পাঞ্জাব সরকার। পরে জননিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করে দু’দফায় সাইদের গৃহবন্দিত্বের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সেই মেয়াদও শেষ হয়ে যায়।

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সরকার লাহৌর হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিয়ে গঠিত বিচারবিভাগীয় বোর্ডের দ্বারস্থ হয়। আরও তিন মাসের জন্য হাফিজ সইদের বন্দিত্বের মেয়াদ বাড়ানোর আর্জি জানানো হয় সেখানে। কিন্তু বিচারপতিরা প্রাদেশিক সরকারের আর্জি খারিজ করে দেন। যে সব অভিযোগে হাফিজ সইদকে বন্দি করা হয়েছে, তার স্বপক্ষে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ নেই বলে বিচারবিভাগীয় বোর্ড জানিয়েছে।

২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পরেও সাইদকে গৃহবন্দি করে পাকিস্তান। কিন্তু ২০০৯ সালে আদালতের নির্দেশে মুক্তি পায় সে। ভারতের দাবি, বিশ্বের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্যই সাইদকে মাঝে মাঝে গৃহবন্দি করে পাকিস্তান।