হামলার পেছনে কে বা কারা, জানা গেল না কিছুই

গত ১০ বছরে এমন সকাল দেখেনি শ্রীলঙ্কা। সকালের সূর্যের এনে দেয়া স্নিগ্ধ রোদ ম্লান হয়ে গেল রক্তের বন্যায়। গতকালের ভয়াবহ হামলার পর পেরিয়ে গেছে ২৪ ঘণ্টা, নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯০-এ। হামলার পর দেশটির পুলিশ এ পর্যন্ত ২৪ জনকে আটক করলেও হামলার পেছনে কে বা কারা কলকাঠি নেড়েছে, সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত কোনো তথ্য আসেনি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে।

এরআগে বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী হামলার পর যেমন দেখা গেছে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে, এ হামলার পর তেমন কোনো চিত্র এখনও আসেনি দৃশ্যপটে। উল্টো শ্রীলঙ্কার ইসলামপন্থী যে উগ্র সংগঠনটিকে হামলার জন্য সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছিল তারা হামলার ঘটনায় শোক জানিয়ে বিচার দাবি করে বসেছে।

শ্রীলঙ্কার সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে গতকাল যে আটটি স্থানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, এর মধ্যে কয়েকটি ছিল আত্মঘাতী।

গতকালের ওই হামলায় ২৯০ জন নিহত হওয়ার পাশপাশি আহত হয়েছেন প্রায় ৫০০ জন। নিহতদের মধ্যে বেশক’জন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন।

খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ইস্টার সানডের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা চলাকালে চালানো ওই হামলায় বিস্মিত গোটা দেশ। ২০০৯ সালে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ বন্ধ হওয়ার পর থেকে রক্তের এমন খেলা দেখা যায়নি কখনও।

এই হামলার বিষয়ে শ্রীলঙ্কার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগেই সতর্ক করেছিল বলে গতকালই জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। কিন্তু এরপরও পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়নি।

কেন পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়নি সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন বিক্রমাসিংহে।

তামিলদের জন্য স্বাধীন ভূখণ্ডের দাবিতে দীর্ঘ ২৬ বছর লড়াইয়ের পর তামিল টাইগারদের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কায় গৃহযুদ্ধের অবসান হয়। ওই যুদ্ধে ৭০ থেকে ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।

গৃহযুদ্ধ থামলেও শ্রীলঙ্কায় বিভিন্ন সময় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মসজিদ ও মুসলিমদের ওপর হামলার জেরে ২০১৮ সালে মার্চে দেশটিতে জরুরি অবস্থাও জারি করা হয়।

সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী শ্রীলঙ্কার ৭০.২ শতাংশ মানুষ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। হিন্দু ও মুসলিম জনসংখ্যার হার যথাক্রমে ১২.৬ ও ৯.৭ শতাংশ। প্রায় ১৫ লাখের মতো খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী মানুষের বাস ভারত মহাসগারের দ্বীপ দেশ শ্রীলঙ্কায়।

সূত্র : বিবিসি