হামলা নিয়ে গোয়েন্দাদের ৩ বছর আগেই সতর্ক করেন মুসলমানরা

ইস্টার সানডের প্রার্থনার সময় গির্জা ও হোটেলে একযোগে বোমা হামলায় তিন শতাধিক নিহতের ঘটনায় স্থানীয় জিহাদি গোষ্ঠী জাতীয় তাওহিদ জামায়াতের ওপর দায় চাপানোর ঘটনা দেশটির মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকদের জন্য বিস্মিত হওয়ার মতো কিছু না।

শ্রীলংকার মুসলিম কাউন্সিলের সহসভাপতি হিলমি আহমেদ বলেন, এ বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির কার্যক্রম নিয়ে তিনি গোয়েন্দা সংস্থাকে জানিয়েছিলেন। -খবর ব্লুমবার্গ নিউজ।

এর পর তিনটি বছর পার হয়ে গেছে। সোমবার দুপুরে শ্রীলংকা সরকার জানায়, খ্রিস্টানদের গির্জা ও পাঁচতারকা হোটেলে ছয়টি বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ী এই তাওহিদ জামায়াত।

কলম্বো থেকে ফোনে আহমেদ ব্লুমবার্গকে বলেন, এ গ্রুপটি অমুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালাতে উৎসাহিত করতেন। তারা বলতেন, ধর্মের নামে অন্যদের হত্যা করতে হবে। কাজেই বছর তিনেক আগে আমি ব্যক্তিগতভাবে গিয়ে এ সংক্রান্ত সব নথি গোয়েন্দাদের দিয়েছিলাম।

‘এতে উসকানিদাতাদের নাম ও বিস্তারিত তথ্য ছিল। এ নিয়ে তারা বসেছিলেন, এটিই ঘটনার মর্মান্তিক দিক, ’ বললেন এ হিলমি আহমেদ।

তিনি বলেন, জাতীয় তাওহিদ জামায়াতের নেতারা ব্যক্তিগতভাবে তহবিলের খোঁজে নামলে পরে এটি বিভিন্ন গোষ্ঠীতে ভেঙে যায়। যদিও তাদের সবাই মৌলবাদী না, কিন্ত চিন্তাগতভাবে গ্রুপটি চরমপন্থী।

স্থানীয় জেহাদি গোষ্ঠী এ হামলার জন্য দায়ী বলে জানিয়েছে শ্রীলংকা। দেশটি যখন এই ভয়াবহ ক্ষত সারতে ব্যস্ত, তখন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহসহ সবার একটিই প্রশ্ন- ইস্টার হামলাকে সামনে রেখে শ্রীলংকা কেন ত্বরিত ব্যবস্থা নেয়নি।

এখন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সঙ্গেও সম্ভাব্য যোগসাজশ নিয়েও তদন্ত করছে শ্রীলংকা সরকার।

পুলিশের মহাপরির্শককে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কলম্বোতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের কাজগুলো করেছেন। কিন্তু আরও উচ্চপর্যায়ে থেকে কাজ করা উচিত ছিল।

চলতি মাসের শুরুর দিকের একটি মেমো প্রচার করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য হারিন ফারন্যান্ডডো। তাতে হুশিয়ারি করে বলা হয়েছে, ওই গ্রুপটি ভারতীয় দূতাবাস ও খ্রিস্টান গির্জায় হামলা চালাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ছাড়া অনলাইন অনুসারীদের মধ্যে বিদ্বেষ প্রচার করে যাচ্ছিল জাতীয় তাওহিদ সদস্যরা।

ফার্নান্ডো বলেন, সেই হুশিয়ারি উপেক্ষা করার দায়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার।