হালদা নদীতে মা মাছ হত্যার দায়ে বোটচালকের কারাদণ্ড

চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ইঞ্জিনচালিত নৌকা চালিয়ে মৃগেল জাতীয় একটি মা মাছ ‘হত্যার’ দায়ে এক বোট চালককে ১০ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদায় চৈত্র-বৈশাখ মাস রুই, কাতলা, মৃগেল ও কার্প জাতীয় মা মাছের প্রজনন মৌসুম।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) আব্দুল আজিজ নামে ওই ব্যক্তিকে ১০ দিনের কারাদণ্ড দেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমীন। আব্দুল আজিজ কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, হালদা নদীতে এখন প্রজননের ভরা মৌসুম। মা মাছ খুব কম সময়ের মধ্যেই ডিম ছাড়বে। তাই নদীতে মা মাছের বিচরণও বেড়েছে। দুপুরে হাটহাজারী উপজেলার খলিফার ঘোনা এলাকায় মৃগেল প্রজাতির একটি মৃত মা মাছ ভেসে আসে। কয়েকজন ব্যক্তি মাছটি উদ্ধার করে ডাঙায় তুলে রাখে। খবর পেয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমীন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা গবেষক মনজুরুল কিবরিয়া ঘটনাস্থলে যান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমীন বলেন, ‘হালদা নদীতে মা মাছের নিরাপত্তায় আমরা সব ধরনের ড্রেজার ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল নিষিদ্ধ করেছি। এমনকি চিঠি দিয়ে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম পর্যন্ত বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে রাতের আঁধারে একটি ইঞ্জিন নৌকা নদীতে ঢুকে পড়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, গত দুইদিনের মধ্যে নৌকাটি ঢুকে পড়েছিল। সেই নৌকার প্রপেলারের আঘাতে মৃগেল মাছটির মৃত্যু হয়। আইন লঙ্ঘন করে হালদা নদীতে প্রবেশ করায় আব্দুল আজিজকে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। নৌকাটিও জব্দ করা হয়েছে।’

বাংলা বছরের ফাল্গুন মাসের শেষ দিকে সাংগু, মাতামুহুরী, কর্ণফুলীসহ বিভিন্ন শাখা নদী ও খাল থেকে মা মাছ হালদা নদীতে চলে আসে। প্রতি বছরের মতো এবারও মা মাছগুলো হালদা নদীতে এসেছে। পরিবেশ ঠিক থাকলে আগামী পূর্ণিমাতে রুই, কাতলা, মৃগেল ও কার্প জাতীয় মা মাছেরা ডিম ছাড়বে হালদা নদীতে। ইতোমধ্যে ডিম ধরার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে হাটহাজারী উপজেলার ডিম আহরণকারীরা।

এদিকে মা মাছ রক্ষায় মৎস্যসম্পদ রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন, ১৯৫০ অনুযায়ী হালদা নদীতে তিন মাসের জন্য মাছ শিকার, বালি তোলার ড্রেজার ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে উপজেলা প্রশাসন।