হুমকিকে পাত্তা দেন না দীপিকা!

ভারতের রাজস্থান এখন ‘পদ্মাবতী’ বিতর্কে উত্তপ্ত। এই উত্তাপের প্রভাব পড়ছে ভারতের অন্য রাজ্যগুলোতেও। শুরু থেকেই সঞ্জয় লীলা বানসালির এই ছবির বিরোধিতা করে আসছে করনি সেনা নামে রাজস্থানের একটি রাজনৈতিক সংগঠন। কিন্তু এত দিন তারা শুধু নির্মাতা বানসালির ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছে। এবার চড়াও হয়েছে সিনেমার প্রধান অভিনয়শিল্পী দীপিকা পাড়ুকোনের ওপর। ‘রানি পদ্মাবতী’র চরিত্রে অভিনয় করে তাঁকে দীপিকা ‘অসম্মান’ করেছেন—এ অভিযোগ এনে গত বৃহস্পতিবার করনি সেনার সভাপতি মহিপাল সিং দীপিকার নাক কেটে নেওয়ার হুমকি দেন। এদিকে উত্তর প্রদেশের ক্ষত্রিয় সমাজ নামের আরেকটি সংগঠন এই নায়িকার শিরশ্ছেদের জন্য পাঁচ কোটি রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছে। এসব হুমকি শুনে ভয় পাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু দীপিকার কথা আলাদা। সাহসী এই নায়িকা এসব আজগুবি হুমকি নিয়ে মোটেও মাথা ঘামাচ্ছেন না। ‘রানি পদ্মাবতী’র মতো সাহসিকতা দেখিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চান তিনি।

একটি মহল দীপিকার নাক কেটে ‘পদ্মাবতী’ ছবির যাত্রা বন্ধ করতে চায়। কিন্তু দীপিকা মনে করছেন, কোনো বাধা তাঁদের ছবির মুক্তি ঠেকাতে পারবে না। দেশের আইনের ওপর যথেষ্ট আস্থা আছে এই তারকার। কিন্তু এ ধরনের হুমকি পাওয়ার পর প্রথম কী মনে হয়েছিল দীপিকার? সম্প্রতি মুম্বাই মিররকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘নাক কেটে ফেলার হুমকি পাওয়ার পর একজন নারী হিসেবে অথবা একজন শিল্পী ও ভারতের নাগরিক হিসেবে আমার রাগ হয়েছে, খুব হতাশ হয়েছি। আবার এই হুমকি আমার কাছে হাস্যকর মনে হয়েছে।’

একটুও ভয় পাননি? দীপিকা বলেন, ‘আমি কখনো ভয় পাই না। ভয় আমার কাছে এমন এক অনুভূতির নাম, যা আমি কখনোই টের পাইনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ অনেক কিছুই বলতে পারে। কোনো চলচ্চিত্র না দেখে তা নিয়ে অনেক কিছু বলার স্বাধীনতা সবার আছে। কিন্তু আমি যেহেতু “পদ্মাবতী” ছবির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, তাই এ ছবির ব্যাপারে কিছু কথা দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি। আমি এ সিনেমায় অভিনয় করেছি। আমি সবাইকে নিশ্চিত করতে পারি যে, ‘‘পদ্মাবতী’’ ছবি নিয়ে প্রতিটি ভারতীয় গর্ববোধ করবেন। রানি পদ্মাবতীর গল্প সবাইকে জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। তাঁর গল্প শুধু ভারতে নয়, পুরো বিশ্ববাসীকে জানানো উচিত।’

‘পদ্মাবতী’ মুক্তি পাওয়ার কথা আগামী ১ ডিসেম্বর। ঐতিহাসিক ঘটনার ওপর নির্মিত এই ছবির মুক্তি ঠেকাতে উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, গুজরাট, হরিয়ানাসহ বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ করছে নানা সংগঠন। কিছু জায়গায় ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতারাও যুক্ত হয়েছেন এই আন্দোলনের সঙ্গে। ভারতে ছবিটি আদৌ মুক্তি পায় কি না, এখন তা নিয়ে আছে সংশয়। মুম্বাই মিরর।