১০ উইকেটে হেরে যা বললেন মাশরাফি

১০ উইকেটে হারার পর কিইবা বলার থাকে একজন অধিনায়কের? তিনি তখন ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে কোনো ভাঙা খেলনা খোঁজেন। ভাঙা বাঁশি। যে বাঁশির বেসুরো সুরে দর্শক-শ্রোতাদের মন ভেজানোর চেষ্টা করবেন। মাশরাফি মুর্তজা সেই পথেই হাঁটলেন। সেই বাঁশি তার হাতে আগেই তুলে দিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। এক অধিনায়ক রক্ষাকবচ হলেন আরেক অধিনায়কের।

দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের প্রথম কোনো ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি হাঁকালেন। তাই ভূমিকার জন্য মাশরাফিকে কারও সাহায্য নিতে হল না। বললেন, ‘মুশি সত্যিই খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। ব্যাটসম্যানরা চেষ্টা করেছে। উইকেট ছিল ব্যাটিং সহায়ক। তবে আমাদের আরও রক্ষণাত্মক বোলিং করা উচিত ছিল।’

বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়কের সংযোজন, ‘জানতাম, ব্যাট করার জন্য এটি আদর্শ উইকেট। এও জানতাম, উইকেট নিতে হবে আমাদের। কিন্তু আমরা শুরুতে ব্রেকথ্রু পাইনি। একদিনের ক্রিকেটে আপনি যদি দুই প্রান্ত থেকে রান নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, তাহলে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা চাপে পড়বে। তখনই আপনি উইকেট পাবেন। আমরা সেটা পারিনি।’

মাশরাফি এজন্য হাশিম আমলা ও কুইনটন ডি কককে কৃতিত্ব দিতে কুণ্ঠিত হননি। ‘তামিম যেহেতু খেলতে পারেনি, তাই আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড়দের ওপর দায়িত্ব বর্তেছিল ইনিংসটা ভদ্রস্থ করার। মুশি সত্যিই খুব ভালো ব্যাটিং করেছে’, আবারও সতীর্থের স্তুতি করলেন ম্যাশ অসংকোচে।

এমন হারের পর সান্ত্বনা খোঁজাটাই রেওয়াজ। অধিনায়ক উপসংহার টানলেন এই বলে যে, ‘আমাদের লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে। ক্রিকেটে এমন হয়ই। সব খেলায় হয়। মনে হয়, পরের ম্যাচের জন্য তামিম ফিট হয়ে উঠবে।’

প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলার জন্য একজন অধিনায়কের হাতে বিভিন্ন রসদ থাকতে হয়। মজুদ থাকতে হয় বিভিন্ন অস্ত্র। এই ম্যাচে মাশরাফি মাঠে নামার আগেই তার অন্যতম দুই প্রধান অস্ত্র তামিম ইকবাল ও মোস্তাফিজুর রহমানকে হারিয়ে কার্যত অসহায় হয়ে পড়েছিলেন।

মুশফিকের সেঞ্চুরি নিশ্চয় তার আক্ষেপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। যদি তামিম থাকতেন, যদি ইনিংসটা আরেকটু ঋদ্ধ হতো। তিনশ’ ছাড়াত। তাতে কী হতো! ডি কক ও আমলা মিলেই তো ম্যাচটা শেষ করে দিলেন।

তাদের সতীর্থরা বসে রইলেন সাজঘরে। ম্যাশ হয়তো ভাবতে পারেন, মোস্তাফিজ থাকলে সূচনায় ব্রেকথ্র“ এনে দিতে পারতেন। দু’একটা উইকেট নেয়া যেত। এমন হারের পর এসব ভাবনা কেবলই বাতুলতা। মনকে প্রবোধ দেয়ার বিফল চেষ্টা।

কিম্বার্লির ডায়মন্ড ওভালে প্রোটিয়াদের ব্যাটিং যদি হয় হীরাতুল্য, তাসকিনদের বোলিং তাহলে কয়লা-সদৃশ। এমন নখদন্তহীন বোলিং নিয়ে আর যাই হোক লড়াই করা যায় না। তার ওপর দিনের শেষ ভাগে দুটি ক্যাচ মিস যন্ত্রণা আরও বাড়িয়ে দেয়। এমন যন্ত্রণাকাতর পারফরম্যান্সের পর কিইবা আর বলার থাকতে পারে!