১০ নারীর মৃত্যু: অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছে জেলা প্রশাসন

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় জাকাত ও ইফতার সামগ্রী নিতে এসে ১০ নারীর মৃত্যুর ঘটনার জন্য কেএসআরএম গ্রুপের জাকাত বিতরণে অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছে জেলা প্রশাসন। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাসহুদুল কবিরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে জেলার সাতকানিয়া উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের খাটিয়া ডাঙ্গা এলাকায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি অব্যবস্থাপনার জন্যই এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর সম্পূর্ণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

তিনি আরও জানান, তদন্ত কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটিতে পুলিশ বিভাগের একজন ও সিভিল সার্জন অফিসের একজনসহ জেলা প্রশাসনের দুই জন এ তদন্ত কমিটিতে রয়েছে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের খাটিয়া ডাঙ্গা এলাকায় জাকাত ও ইফতার সামগ্রী নিতে গিয়ে সোমবার (১৪ এপ্রিল) ঘটনাস্থলে ৯ নারী ও বিকালে আরও একজন শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও ১০-১২ জন। তারাও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তসলিমা আবছার একথা জানিয়েছেন।

চট্টগ্রামের জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) নূরে আলম মিনা দাবি করেছেন, প্রচণ্ড গরম ও ভিড়ে হিট স্ট্রোকের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তিনি।

এসপি বলেন, সোমবার ইউনিয়নে খাটিয়া ডাঙ্গা এলাকায় জাকাত ও ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছিল কেএসআরএম গ্রুপ। এগুলো নিতে অনেক মানুষ ভিড় জমায়। গরম ও ভিড় বেশি থাকায় লোকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নলুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তসলিমা আবছার আরও বলেন, ‘প্রতিবছর তাদের এলাকার একটি মসজিদের মাঠে কেএসআরএম গ্রুপ জাকাত ও ইফতার সামগ্রী বিতরণ করে। মাঠে ১০ হাজার মানুষের ধারণক্ষমতা থাকলেও আজ জমায়েত হয়েছিল ২০-৩০ হাজার মানুষ। অতিরিক্ত ভিড় ও গরম হওয়ায় হিট স্ট্রোক করে ৯ জন মারা গেছেন। আরও কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’

সাতকানিয়ায় জাকাত নিতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কেএসআরএম এর সিইও মেহেরুল করিম বলেন, ‘কোনও মৃত্যুই কাঙ্ক্ষিত নয়। আজ ইফতার সামগ্রী ও জাকাত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখানে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াও পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল। তারপরও চাপের কারণে হয়তো এমন ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়েও তারা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’