১৪ বছরেও শেষ হয়নি ৬৩ জেলায় বোমা হামলার বিচার

আজ ১৭ আগস্ট। সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলার ১৪ বছর। ২০০৫ সালের এই দিনে জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামের একটি জঙ্গী সংগঠন পরিকল্পিতভাবে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬৩ জেলায় একই সময়ে বোমা হামলা চালায়। এতে দু’জন নিহত ও ১০৪ জন আহত হন।

সাম্প্রতিক সময়ের কিছু ঘটনায় বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত গতিতে এগোলেও ২০০৫ সালে সংগঠিত সিরিজ বোমা হামলার বিচারেও গতি নেই। গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ সদর দফতর ও র‍্যাবের তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার পরপরই সারা দেশে ১৫৯টি মামলা হয়েছিল। এরমধ্যে ডিএমপিতে ১৮টি, সিএমপিতে ৮টি, আরএমপিতে ৪টি, কেএমপিতে ৩টি, বিএমপিতে ১২টি, এসএমপিতে ১০টি, ঢাকা রেঞ্জে ২৩টি, চট্টগ্রাম রেঞ্জে ১১টি, রাজশাহী রেঞ্জে ৭টি, খুলনা রেঞ্জে ২৩টি, বরিশাল রেঞ্জে ৭টি, সিলেট রেঞ্জে ১৬টি, রংপুর রেঞ্জে ৮টি, ময়মনসিংহ রেঞ্জে ৬টি ও রেলওয়ে রেঞ্জে ৩টি। যার মধ্যে ১৪২টি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছিল। বাকি ১৭টি মামলায় ঘটনার সত্যতা থাকলেও আসামি শনাক্ত করতে না পারায় চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়। এসব মামলায় ১৩০ জন এজাহারনামীয় আসামি ছিল। গ্রেফতার করা হয়েছে মোট ৯৬১ জনকে। অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৭২ জনের বিরুদ্ধে। এসব মামলায় ৩২২টি জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে। এর মধ্যে ফাঁসির দণ্ড হয়েছে ১৫ জনের। খালাস পেয়েছে ৩৫৮ জন আর জামিনে রয়েছে ১৩৩ জন আসামি।

র‍্যাব সূত্র জানিয়েছে, মোট মামলার মধ্যে এখনও ৫৯টির বিচার চলছে। গত ৩১ জুলাই ফরিদপুরে সিরিজ বোমা হামলার মামলায় ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় সেখানকার বিশেষ দায়রা জজ আদালত। আরও কয়েকটি বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।

জঙ্গি দমনের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা জানান, সিরিজ বোমা হামলায় জড়িত জেএমবি এখন দুটি ধারায় বিভক্ত। পুরনো জেএমবি ও নব্য জেএমবি এই দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে এখনও তারা তৎপর হওয়ার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে পুরনো জেএমবির শীর্ষ নেতা সালাউদ্দিন সালেহীন এখন ভারত থেকে সংগঠনটির নেতৃত্ব দিচ্ছে।

অপরদিকে গুলশান ও শোলাকিয়ার ঈদগাহে হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার মুখে নব্য জেএমবি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে গেছে। শীর্ষ জঙ্গিদের অনেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছে। অনেকে আবার ধরা পড়েছে। কারাগারের বাইরে থাকা জঙ্গিরা গোপনে তৎপর হওয়ার চেষ্টা করছে।