১৫ কার্য দিবসের মধ্যে বেরোবিতে মাহমুদুলকে নিয়োগ দিতে আদালতের নির্দেশ

বেরোবি প্রতিনিধি : রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রভাষক পদে মো: মাহমুদুল হককে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালতের হাইকোর্ট ডিভিশন। ১৫ই অক্টোবর বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসাইন ও বিচারপতি আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বেঞ্চ মাহমুদুল হক’কে আদেশপ্রাপ্তির পনের দিনের মধ্যেই নিয়োগ প্রদানের আদেশ দেন ।

২০১২ সালের ১৩ ই জানুয়ারী অনুষ্ঠিত নিয়োগ নিয়োগ বোর্ড ৬ জনকে সুপারিশ করে। সে অনুযায়ী, ২০১২ সালের ১৪ জানুয়ারী ২১ তম সিন্ডিকেট এবং ২৪শে ফেব্রুয়ারীতে অনুষ্ঠিত ২২ তম সিন্ডিকেটের সভায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাকী ৪ জনকে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২২ তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়, যদি কোনো প্রার্থী যোগদান না করে তাহলে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে মেধাক্রম অনুসারে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

তবে নিয়োগ বোর্ড ও সিন্ডিকেট সভায় মনোনীত তিনজনের প্রথমজন আবদুল কাদের মণ্ডল ওই পদে যোগদান করেননি। ফলে অপেক্ষমান তালিকা থেকে আবদুল কাদের মণ্ডলের যায়গায় মাহমুদুল হকের যোগদান করার কথা ।কিন্তু তার যায়গায় তাবিউর রহমানকে নিয়োগ প্রদান করে কর্তৃপক্ষ।

হাইকোর্টের রিট অনুযায়ীর মাহমুদুল হকের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিতাদেশের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু সংরক্ষিত থাকার কথা থাকলেও তৎকালীন ভিসি একেএম নুরুন্নবী নতুন একটি নিয়োগ বোর্ড গঠন করেন। সেখানে মাহমুদুল হকের নাম না থাকায় হাইকোর্টের অন্য একটি রিটের মাধ্যমে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।

সর্বশেষ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে করা রিটের মাধ্যমে ২০১৭ এর ১১৭৫৮নং রিট পিটিশনের রায় অনুষ্ঠিত হয় ১৫ ই অক্টোবর। সেখানে আদেশপত্র প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে মাহমুদুল হককে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রভাষক (স্থায়ী) পদে নিয়োগ প্রদান করার নির্দেশে দেয়া হয়।

রিট পিটিশনকারী মো: মাহমুদুল হক বলেছেন ”এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যেহেতু এই পদে আমাকেই নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল,সেহেতু আব্দুল জলিল মিয়া (সাবেক উপাচার্য) অন্য একজনকে নিয়োগ দিয়ে অপরাধ করেছেন। আবার পরবর্তীতে আরেক উপাচার্য একেএম নুরুন্নবী তিনিও পারতেন বিষয়টির সমাধান করতে। কেননা বিষয়টি অত্যন্ত সুষ্পষ্ট ছিল। আমি বিশ্বাস করি বর্তমান উপাচার্য বিষয়টির সুষ্ঠ সুরাহা করবেন।

আজ মুঠোফোনে কল করলে তিনি আরো বলেন, ২০১২ সালে নিয়োগ বোর্ড ৬ জনকে সুপারিশ করে। সে অনুযায়ী, ২১ তম সিন্ডিকেট সভায় গোলাম কাদের মন্ডল, মো. নজরুল ইসলাম এবং তাসনীম হুমায়দাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে ২২ তম সিন্ডিকেটে ‘যে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হবে এই মর্মে সিদ্ধান্ত থাকায় ২৩ তম সিন্ডিকেটে সুনির্দিষ্ট একজনকে নিয়োগের কথা বলা হয়। সে অনুযায়ী আমাকে বাদ দিয়ে অপর দুইজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।যা আমাকে আমার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, আমি ১৫ দিন দেখবো। এরপর নিয়োগ না দিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবো।২০১৩ সালেও বিশ্ববিদ্যালয়কে কয়েকবার আইনী নোটিশ দেওয়া হয়। এরপরেও আমাকে নিয়োগ না দিয়ে ২০১৪ সালে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বোর্ড গঠন করলে ২০১৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারী আদালত রুল জারী করেন।

বিভাগটিতে মাহমুদুল হককে নিয়োগের ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে কিনা (আদালতের রিট পিটিশন অনুযায়ী) জানতে চাইলে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশাসনিক অ্যাক্টিভিটিজ এ (কার্যক্রমে) যা হবে তাই।প্রশাসন যাকে নিয়োগ দিবে সেটাই (তিনি হবেন)।

আদালতের রিট পিটিশন কপি পেয়েছেন কি না জানতে আজ কল করলে রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইব্রাহীম কবীর বলেন, এখনো কপি পাইনি, পেলে কর্তৃপক্ষকে জানাবো।

উল্লেখ্য, বিভাগটিতে বর্তমান তিনজন শিক্ষক দিয়ে ৬ টি ব্যাচ চলছে। যা চরম শিক্ষক সংকটে রয়েছে । কোনো কোনো ব্যাচে এখনও শুরুই হয়নি দুই একটি কোর্সের ক্লাস।