১৬ বছরে লক্ষাধিক ওরাংওটাং হত্যা

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বর্নিও দ্বীপে ১৯৯৯ সাল থেকে লক্ষাধিক ওরাংওটাং হত্যা করা হয়েছে। এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। ১৬ বছর ধরে ওই দ্বীপে জরিপে চালিয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিপন্নপ্রায় এই প্রাণীটিকে হত্যার এই সংখ্যা আঁতকে ওঠার মতো। গাছ কাটা, পাম তেল, খনিখনন ও পেপারমিলের মতো বন উজার কার্যক্রম এ ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। ‘কারেন্ট বায়োলজি’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হচ্ছে, ওই বন থেকে প্রাণীরা ক্রমাগত ‘উধাও’ হচ্ছে।

গবেষণার প্রধান জার্মানির ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট ফর এভোলিউশনারি অ্যানথ্রোপোলজির ড. মারিয়া ফোখট বলেন, এই বিশালসংখ্যক ওরাংউটান নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে।

ড. ফোখট ও তাঁর সহকর্মীরা বলছেন, মাঠের শস্যের ওপর উপদ্রব ঠেকাতে ওরাংউটান হত্যা করে থাকে শিকারিরা। এর আগে এই বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।

সহগবেষক যুক্তরাজ্যের লিভারপুল জন মুরস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সার্জ উইচ বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল না যে বনটিতে ক্ষতির পরিমাণ এত বড় হবে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে এর জন্য শিকারিরাই মূলত দায়ী।’ তিনি আরো বলেন, ‘প্রাণীদের সঙ্গে মানুষের বিরোধ বাধে তখন, যখন প্রাণীরা আবাদি জমিতে চলে আসে। তখন ক্ষতি থামাতে প্রাণীদের হত্যা করে মানুষেরা। গত সপ্তাহে আমরা একটি প্রতিবেদন পেয়েছি, যেখানে বর্নিওতে নিহত একটি ওরাংউটানের শরীরে ১৩০টি গুলি পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এটি বেদনাদায়ক এবং এটা করার কোনো মানে হয় না। ওরাংউটান কৃষকের ফলমূল খেতে পারে; কিন্তু তারা বিপজ্জনক নয়।’ ইচ্ছাকৃত এ হত্যা বন্ধে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অধ্যাপক উইচ।

গবেষণায় দেখা গেছে, বর্নিওতে প্রাকৃতিক সম্পদ বিনাশকরণ এখনো থেমে নেই। বন উজারের কারণে আগামী ৩৫ বছরে আরো ৪৫ হাজার ওরাংউটান নির্মূল হতে পারে বলে আশঙ্কা গবেষকদের। সূত্র : বিবিসি