১৯ ফেব্রুয়ারি চালু হচ্ছে ফোর-জি : বিটিআরসি

আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ফোর জি’র চূড়ান্ত লাইসেন্স দেয়ার কথা থাকলেও একদিন এগিয়ে অর্থাৎ ১৯ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) চূড়ান্ত লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে। লাইসেন্স দেয়ার সাথে সাথেই অপারেটরগুলো চালু করতে পারবে ফোর-জি। তবে সব গ্রাহকই ১৯ তারিখ থেকে ফোর-জি সেবা পাবে না। শনিবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি অপারেটগুলোর মধ্যে লাইসেন্স হস্তান্তর করা হবে। সেদিন থেকেই চালু হবে ফোর-জি। অপারেটগুলো কিন্তু বহু আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, যারা সিমকার্ড চেঞ্জ করে ফোর-জিতে গিয়েছে তারা সেদিন থেকেই সেবা পাবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রযুক্তিগত সমস্যা থাকবে। ফোর-জি আসার পরও সমস্যা থাকতে পারে, তবে তা আগের চেয়ে কিছুটা কমবে বলে আশা করি।

এর আগে গত মঙ্গলবার ঢাকা ক্লাবে দেশে চতুর্থ প্রজন্মের টেলিযোগাযোগ সেবা ফোর-জি চালুর তরঙ্গ নিলাম হয়। নিলামে অংশ নিয়ে চতুর্থ প্রজন্মের (ফোর-জি) ইন্টারনেট সেবার জন্য ১৫.৬ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কেনে গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক। এর মধ্যে বাংলালিংক ১০.৬ এবং গ্রামীণফোন ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনেছে। ১৮০০ ও ২১০০ মেগাহার্টজে তরঙ্গ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ এবং গ্রামীণফোন ও বাংলালিংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা নিলামে উপস্থিত ছিলেন।

ফোর-জিতে ২০ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ বেতার তরঙ্গ বিক্রি হবে। এতে ভ্যাটসহ প্রায় পাঁচ হাজার ৩০০ কোটি টাকা আয় হবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ।

বিটিআরসি কর্মকর্তারা জানান, গ্রামীণফোন শুধু এক হাজার ৮০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গে এবং বাংলালিংক দুই হাজার ১০০ মেগাহার্টজ ও এক হাজার ৮০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নিলামে অংশ নিচ্ছে। দুটি ব্র্যান্ডে নিলামে অংশ নিতে বাংলালিংক ৩০০ কোটি টাকা এবং গ্রামীণফোন একটি ব্র্যান্ডে অংশ নিতে ১৫০ কোটি টাকা বিড আর্নেস্ট মানি হিসেবে জমা দিয়েছে।

ফোর-জি সেবার জন্য টেলিটক, সিটিসেল, বাংলালিংক, গ্রামীণফোন ও রবি আবেদন করেছিল। আর তরঙ্গ নিলামের জন্য বাংলালিংক, গ্রামীণফোন, রবি ও সিটিসেল আবেদন জমা দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত দুটি অপারেটর নিলামে অংশ নিয়েছে।

অপারেটর সূত্রে জানা গেছে, থ্রি-জির তুলনায় ফোর-জি ইন্টারনেটের গতি হবে কমপক্ষে দ্বিগুণ।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওপেন সিগন্যালের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে থ্রি-জি ইন্টারনেটের গড় গতি ৩ দশমিক ৭৫ এমবিপিএস (মেগাবিটস প্রতি সেকেন্ড)। আর বিশ্বে ফোর-জি প্রযুক্তির গড় গতি ১৬ দশমিক ৬ এমবিপিএস। ভারতে ফোর-জির গড় গতি বর্তমানে ৬ দশমিক ১৩ এমবিপিএস। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডের মতো দেশে ফোর-জির গতি ৯ থেকে ১৪ এমবিপিএসের মধ্যে। ফোর-জি গতিতে বিশ্বে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা দুই দেশ হলো সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া। বিশ্বজুড়ে ৩৮ লাখ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর ৫ হাজার কোটি তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে একেকটি দেশের ফোর-জি ইন্টারনেটের গতি নির্ধারণ করে ওপেন সিগন্যাল।