২০২২ সালের মধ্যেই মহাকাশে মানুষ পাঠাবে ভারত

৭২তম স্বাধীনতা দিবসে দিল্লির লালকেল্লা থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামী বছরের সাধারণ নির্বাচনের আগে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটিই ছিল তার পঞ্চম তথা শেষ স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ।

বিশ্বের বৃহত্তম সরকারি তহবিল সমৃদ্ধ স্বাস্থ্য পরিষেবার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। এর নাম-আয়ুষ্মান-ভারত জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্প। কয়েকটি রাজ্যে আগামী সেপ্টেম্বরের শেষে এটি জরুরি ভিত্তিতে শুরু করা হবে। আয়ুষ্মান ভারতকে ‘মোদিকেয়ার’ হিসেবেও অভিহিত করা হচ্ছে।

প্রতি পরিবার পিছু বছরে পাঁচ লাখ টাকা স্বাস্থ্যবীমার মাধ্যমে কয়েক কোটি দরিদ্র পরিবার এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে বলে জানা গেছে। জাতির উদ্দেশে ভাষণে মোদি বলেন, আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরা দেশের পতাকা হাতে মহাকাশে পৌঁছে যাবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে দলের স্বার্থের থেকেও দেশের স্বার্থ সবার আগে।

ডিজিটাল ইন্ডিয়া তৈরির পথে দেশ আরও এগিয়ে গেছে বলেও উল্লেখ করেন মোদি। দেশের কৃষকরা এখন বৈজ্ঞানিক উপায়ে ফসল উৎপাদন করছে। দেশের সেনাবাহিনী সার্জিক্যাল স্ট্রাইকেও অংশ নিচ্ছে। কেউ চোখ রাঙালে সেনারা পাল্টা জবাব দিতে জানে।

জিএসটি এবং নোটবন্দি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জিএসটি সবাই চেয়েছিল, কিন্তু কেউ পরিকল্পনা করতে পারছিল না। এই সরকার সেটা করতে পেরেছে। তবে দেশের ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা জিএসটিকে ভালভাবেই মেনে নিয়েছে। জিএসটি নিয়ে প্রথমে সমস্যা হলেও এখন সবাই সুফল পাচ্ছে।

ইসরো প্রসঙ্গে মোদি বলেন, ‘আমাদের দেশের বিজ্ঞানীরা আমাদের গর্ব। একসঙ্গে একশোর বেশি উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানো কিংবা একবারে মঙ্গলযানের সফল উৎক্ষেপণ করে তারা পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূরণের আগে মহাকাশে মানুষ পাঠাবে ভারত। জাতীয় পতাকা নিয়ে মহাকাশে যাবে ভারতবাসী।

ভারতীয় বিজ্ঞানীরাই সেই কাজ করবেন। সফল হলে ভারতই হবে বিশ্বের চতুর্থ দেশ যারা নিজস্ব প্রযুক্তিতে মহাকাশে মানুষ পাঠাবে। মোদি বলেন, কৃষিতে এবার আধুনিকীকরণ করা হবে আরও দ্রুত। যাতে আমাদের কৃষকরা বিশ্ববাজারে আর পিছিয়ে না থাকে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে স্বচ্ছ ভারত অভিযানে ৩ লাখ শিশু প্রাণে বেঁচে গেছে। প্রায় ১০ কোটি পরিবারকে বাৎসরিক পাঁচ লাখ টাকার স্বাস্থ্য বিমা দেওয়া হবে। ফলে বিনা চিকিৎসায় কোনও গরিব মানুষ মরবে না।

দেশের নারীদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য, ‘সুপ্রিম কোর্টে আজ তিনজন নারী বিচারক। মন্ত্রিসভায় সব থেকে বেশি নারী সদস্য রয়েছে। আমাদের নারীরা এখন অনেক এগিয়ে। তাই তাদের সম্মান জানাতে হবে। তিন তালাক নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের মুসলিম নারীরা এখনও তিন তালাক নিয়মের কারণে পীড়িত। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই সরকার তিন তালাক বিল নিয়ে আসবে। এর পাশাপাশি তিনি ঘোষণা করেন, এবার থেকে সেনাবাহিনীতে নারীরা পুরুষদের সমান অধিকার পাবেন। জম্মু হোক কিংবা লাদাখ- প্রত্যেকটি এলাকার প্রভূত উন্নয়ন করতে ভারত সরকার বদ্ধপরিকর বলেও উল্লেখ করেন তিনি।