২ মাসে দুদক হটলাইনে অভিযোগ ২ লাখ, আমলযোগ্য ১৫

দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) টোল ফ্রি ‘হটলাইন ১০৬’ চালুর দুই মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে অভিযোগ জানিয়ে কল এসেছে দুই লাখেরও বেশি। বিপুলসংখ্যক কল আসলেও দুদক কর্মকর্তাদের বিবেচনায় মাত্র পাঁচ শতাধিক অভিযোগ লিখিতভাবে গ্রহণ করা হয়। আর চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই শেষে মাত্র ১৫টি অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তে নেমেছে দুদক।

রোববার দুপুরে আলাপকালে দুদকের মুখপাত্র ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, দুর্নীতি সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত ও অভিযোগ সরাসরি টেলিফোনের মাধ্যমে লিপিবন্ধ করতে গত ২৭ জুলাই দুদক টোল ফ্রি হটলাইন চালু করে।

তিনি বলেন, গত দুই মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। যেসব টেলিফোন এসেছে তার বেশিরভাগই দূর-দূরান্ত থেকে এসেছে। প্রতিদিন দুদকের পাঁচজন করে কর্মকর্তা হটলাইনে কল রিসিভ ও অভিযোগ গ্রহণ করেন।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ জুলাই থেকে গতকাল ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে হটলাইনে দুই লাখের বেশি কল আসলেও দুদক কর্মকর্তারা কমবেশি ১৫ হাজার টেলিফোন কল রিসিভ করে সময় নিয়ে অভিযোগ শুনেছেন। সেসব অভিযোগ দুদকের কর্মপরিধির মধ্যে পড়ে, এমন পাঁচ শতাধিক অভিযোগ লিখিতভাবে নথিভুক্ত করেন তারা। পরে সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্তভাবে ১৫টি অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তে নেমেছেন দুদক কর্মকর্তারা।

এসব অভিযোগের মধ্যে ভূমি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ একাধিক সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার আর্থিকসহ বিভিন্ন দুর্নীতি সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে দুদক কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি।

হটলাইনে প্রায় দুই লাখ কল আসলেও আমলযোগ্য অভিযোগ কম কেন জানতে চাইলে দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, দুদকে কী ধরনের অভিযোগ দায়ের করা যাবে এ সম্পর্কে জনসাধারণের পর্যাপ্ত জানা না থাকায় সামান্য ব্যক্তিগত বিষয়েও লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে ফোন করেছেন।

তিনি বলেন, আমলে নিয়ে মাত্র ১৫টি তদন্ত শুরু হলেও কিছু কিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে দুদকের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে অভিযোগ চালিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে হাতে-নাতে আটক করেছেন।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, রাজধানীর মিরপুরে এক দৃষ্টি-প্রতিবন্ধীর কাছ থেকে সরকারি চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দুই দফায় নগদ টাকা হাতিয়ে নেওয়ায়, ওই দৃষ্টি-প্রতিবন্ধী অভিযোগ করেন। পরে তৃতীয় দফায় টাকা নেওয়ার সময় অভিযুক্তকে হাতে-নাতে ধরা হয়। এ ধরনের আরও কিছু উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি।

দুদকের এ কর্মকর্তা আরও জানান, দুদকের মহাপরিচালক ও একাধিক পরিচালক বিভিন্ন অভিযোগ সম্পর্কে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়াধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিদিন যোগাযোগ করে ও অভিযোগ সম্পর্কে জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানাচ্ছেন। এতে বেশ সুফলও পাওয়া যাচ্ছে বলে তিনি জানান।