৬ ঘন্টা আগেই মোবাইল ইন্টারনেট চালু

যথা সময়ের ৬ ঘন্টা আগেই মোবাইল ইন্টারনেট চালু করেছে সরকার। রোববার রাত ১২টার পর মোবাইল ইন্টারনেট চালু হওয়ার কথা থাকলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার ২ ঘণ্টা পরেই (সন্ধ্যা ৬টার দিকে) টুজি, থ্রিজি ও ফোরজি ইন্টারনেট উন্মুক্ত করে দিয়েছে অপারেটররা।

৭ ডিসেম্বর রাত ১০টা থেকে ২৮ ডিসেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রথমবার দেশের সব মোবাইল ফোনে থ্রিজি ও ফোরজি নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখা হয়েছিল। এরপর ২৯ ডিসেম্বর (শনিবার) বিকাল ৩টা থেকে দ্বিতীয় দফায় থ্রিজি ও ফোরজি ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল।

দ্বিতীয় দফায় থ্রিজি ও ফোরজি ইন্টারনেট বন্ধ করা হলেও টুজি ইন্টারনেট চালু ছিল। তবে এদিন মধ্যরাত থেকে টুজি ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেয়া হয়। কার্যত মোবাইল ডাটা ব্যবহার করে ইন্টারনেট সেবা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হয়।

বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, ‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে ও গুজব প্রতিরোধে’ সরকারের নির্দেশনায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ভোটের দিন (৩০ ডিসেম্বর) মধরাত পর্যন্ত মোবাইল ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ থাকবে বলেও সংস্থাটি জানিয়েছিল।

তবে যথা সময়ের ৬ ঘণ্টা আগে ভোট শেষ হওয়ার পরেই টুজি, থ্রিজি ও ফোরজি ইন্টারনেট চালু করার নির্দেশ দেয় বিটিআরসি।

মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট স্বাভাবিক ছিল বলে জানিয়েছেন ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি’র সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক।

প্রসঙ্গত, আসন্ন সংসদ নির্বাচনের ভোটের আগে ‘অপপ্রচার’ ঠেকাতে গত ১৩ ডিসেম্বর এক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ইন্টারনেটের গতি কমানোর প্রস্তাবনা দেয় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।

ওই বৈঠকে সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত আইন-শৃঙ্খলাবিষয়ক সমন্বয়সভায় এই পরামর্শ দেয়া হয়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। এতে সব বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, সব রিটার্নিং অফিসার, জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি বলেন, নির্বাচনে মোবাইল ব্যাংকিং ও বিভিন্ন পরিবহনের মাধ্যমে টাকার লেনদেন হয়। এসব দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র দেওয়ার বিষয়ে নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দেন।

ঊর্ধ্বতন একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার ঠেকাতে তিনি নির্বাচনের সময় মোবাইল নেটওয়ার্ক ফোরজি থেকে নামিয়ে টুজি করা এবং ভোটকেন্দ্রে বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর সরাসরি সম্প্রচার নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাব দেন।

র‌্যাবের ডিজি বলেন, ২০১৪ সালের মতো কোনো ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। সাইবার ওয়ার্ল্ড উত্তপ্ত করে গুজব ছড়িয়ে যাতে নির্বাচনী পরিবেশ বানচাল করতে না পারে, সেদিকে তাঁরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন।

র‌্যাব বিটিআরসির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান। তিনিও ভোটের সময়ে তিন দিনের জন্য মোবাইল নেটওয়ার্ক ফোরজি থেকে নামিয়ে টুজিতে আনার প্রস্তাব করেন।

নির্বাচনে মোবাইল নেটওয়ার্ক ফোরজি থেকে টুজিতে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করেন আনসারের মহাপরিচালকও।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে তিন দফায় সিদ্ধান্ত নিয়ে টুজি, থ্রিজি ও ফোরজি ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার।