৭ দিনের স্বাক্ষর একদিনেই করেন এই ‘শিক্ষক’ : স্কুল ফাঁকি দিলেও নির্বিকার কর্তৃপক্ষ

হামিদা আক্তার , নীলফামারী থেকে : এ কেমন শিক্ষক ! যিনি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর ক্লাসে না গিয়ে স্কুল ফাঁকি দিয়ে ঘুরে বেড়ান এদিক সেদিক। আর বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় একদিনেই স্বাক্ষর করেন ৭ দিনের।

৩১ জুলাই সোমবার সকাল ১১ টায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবাড়ী বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে সরজমিনে গিয়ে এমনটাই চোখে পড়লো প্রতিবেদকের। বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিন ধরে একজন জুনিয়র সহকারী মৌলভী শিক্ষক প্রায়ইশ স্কুলে আসেন না কিংবা আসলেও কিছুক্ষন থেকে শ্রেণী কক্ষের ক্লাসে না ঢুকেই কাজ আছে বলে তিনি বাইরে চলে যান।

দাপুটে এ শিক্ষকের কর্মকান্ডে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে থাকেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যসব শিক্ষকগণ। ছাত্রী-ছাত্রীদের এহেন অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার দিন সকাল থেকেই বিদ্যালয়ে গিয়ে ঐ শিক্ষককে চোখে পড়েনি প্রতিবেদকের। সংবাদকর্মী বিদ্যালয়ে এসেছে এমন খবর শুনে উপজেলা সদরের একটি চা দোকানের আড্ডাস্থল থেকে ছুটে আসেন বিদ্যালয়ের সহকারী ঐ শিক্ষক মোঃ রশিদুল ইসলাম। তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ঢুকেই কারো দিকে না তাঁকিয়ে রাগান্বিত হয়ে হাজিরা খাতাটি হাতে নিয়েই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর না থাকায় বেশ কিছু দিনের স্বাক্ষর পরপর করতে থাকেন প্রধান শিক্ষকের সামনেই। একই দিনে কয়েক দিনের স্বাক্ষর করতে থাকা শিক্ষকের ভিডিওচিত্র গোপন ক্যামেরায় প্রতিবেদক ধারণ করেন। প্রধান শিক্ষকের কক্ষের ওয়ালে থাকা ঘড়িতে তখন সময় ১১.৪৫ মিনিট।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ আমির আলীর সাথে তাৎক্ষনিক কথা হলে তিনি ঐ সহকারী শিক্ষক মোঃ রশিদুল ইসলামের দেড়িতে আসা ও স্কুল ফাঁকির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, কি আর করার এভাবেই তিনি বিদ্যালয়ে আসেন ও চলে যান। মন চাইলে আসেন, না চাইলে আসেন না। তিনি তেনার খেয়াল খুশি মত বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করেন। আমরা নিরুপায়। তেনার শ্যালক নাকি কোন এক মন্ত্রণালয়ের সচিব। তাই তিনি এভাবেই চলেন। প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে বের হয়েই কথা হয় ঐ বিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র-ছাত্রীর সাথে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব ছাত্র-ছাত্রীরা বলে, স্যার ক্লাসে আসতে চাইলেও পরে আর আসেন না। আমরা কিছু বলতে গেলেই ধমক দেন, রাগ দেখান। প্রধান শিক্ষক স্যারকে বলেও কিছু হয় না। এ জন্য আমরা এখন স্কুল ছুটি না দিলেও বাড়ী চলে যাচ্ছি (সময়-১২.৪০ মিনিট,৩১ জুলাই’১৭)।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ হালিমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন আমি জরুরী একটি মিটিং-এ আছি। পরে বিষয়টি আমি দেখবো। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ রশিদুল ইসলাম কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।