৯৯৯ এ ফোন করে বন্দি জীবনের অবসান ঘটল তরুণীর

দেশের জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে বন্দি জীবনের অবসান ঘটল এক তরুণীর। নিজ ঘরে বাবা-মা কর্তৃক ২৩ দিন বন্দি ছিলেন তিনি।

গত ১৪ এপ্রিল থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন একটি বাসায় শিকলে বাঁধা অবস্থায় দিন যাপন করছিলেন তিনি।

অতপর ৬ মে (সোমবার) ৯৯৯ এ ফোন করে নিজের অবস্থার কথা জানায় সেই তরুণী। ফোন পেয়ে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পুলিশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেয়া হয়।

ওই স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে, ৬ মে সন্ধ্যায় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ একটি কল আসে। ওপাশ থেকে একটি নারী কণ্ঠ জানায় যে, তিনি শিকল বাঁধা অবস্থায় নিজ বসতবাড়িতেই বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন। তরুণী তার বর্তমান অবস্থান ও পরিচয় তুলে ধরেন। তার এমন অভিযোগ শুনে ৯৯৯ এর কলটেকার ফতুল্লা থানার ওসিকে ফোনে যুক্ত করে দেন।

ফোনে ওসি বিস্তারিত জেনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠান। ফতুল্লার একটি তিন তলার ফ্লাটের পেছনের কক্ষ থেকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায় সেই তরুণীকে। শিকলের তালা খুলে উদ্ধার করা হয় তাকে। এরপর ওই ফ্ল্যাটে সে সময় উপস্থিত তার বাবা ও মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তরুণীর অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেন তারা।

তারা জানান, ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম করে কয়েকবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল তাদের মেয়ে। তাই এবার ধরে এনে শিকল বেঁধে রাখা হয়েছে যেন পালিয়ে যেতে না পারে।

ভুক্তোভোগী তরুণী জানায়, তার বয়স এখন ২০ চলছে এবং তিনি ঢাকার একটি কলেজে অনার্সে পড়ছেন।

একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষকে অমানবিকভাবে আটকে রাখার অপরাধে তরুণীর বাবা ও মাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

আটক বাবা ও মায়ের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় পেনাল কোড ৩৪২ ধারার অভিযোগ করেন তরুণী। মামলা রুজু করে আসামী বাবা ও মাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

এদিকে ভুক্তোভোগী ওই তরুণীকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। আদালতে জবানবন্দি প্রদান শেষে নিরাপদ হেফাজতে রাখার জন্য আবেদন করা হয়।

আদালত ভিকটিম পূর্ণ বয়স্ক হওয়ায় তাকে নিজ জিম্মা প্রদান করেন।

এভাবেই ৯৯৯ ও পুলিশের সহযোগিতায় ২৩ দিনের শিকল বাঁধা জীবনের অবসান ঘটে এক তরুণীর।