অক্টোবরে হবে ঘূর্ণিঝড়
জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়কে বলা হয় বর্ষাকাল। এ বছর এই চার মাসে বৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৯ দশমিক ১৭ শতাংশ বেশি। অথচ ২০১৬ সালে বৃষ্টি হয়েছিল ৩ দশমিক ৩ শতাংশ কম। এক বছরের ব্যবধানে বৃষ্টি হয়েছে ২২ শতাংশ বেশি।
ভবিষ্যতে বৃষ্টির মাত্রা বৃদ্ধি পেলে বিপদ আসবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম এম আমানত উল্লাহ খান। তিনি বলেন, গতবার বৃষ্টি কম হয়েছে। এবার বেশি হয়েছে। এমন হতেই পারে। এটিকে অস্বাভাবিক কোনো কিছু মনে হচ্ছে না। তবে আগামী বর্ষা মৌসুমে বা পরের কয়েক বছর বর্ষাকালে বেশি বৃষ্টি হলেই বিপদ।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, এবার অক্টোবরের প্রথমার্ধে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিতে পারে। কিন্তু এর পরপরই কয়েকটি নিম্নচাপ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। যার একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
অক্টোবর-নভেম্বর মাসকে ঘূর্ণিঝড় প্রবণ সময় বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডরের মতো ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হেনেছিল উল্লেখ করেন তিনি।
আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ২৩ সেপ্টেম্বরের পর দিনের ব্যাপ্তি কমে রাত বড় হয়। এ সময় সূর্য বঙ্গোপসাগরে লম্বভাবে কিরণ দেয়। আন্দামান সাগর বা এর আশপাশের অঞ্চলে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপ জলীয় বাষ্পসহ শক্তিসঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে থাকে। কিন্তু সাগর উপকূলের কাছাকাছি সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপ শক্তি সঞ্চয় করতে পারে না। উপকূলে আঘাত হানার আগেই এ ধরনের নিম্নচাপ বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে যায়।
এবারের পুরো বর্ষাকালে ছিল মৌসুমি বায়ুর দাপট। জুন মাসে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের বিস্তৃত ঘটার পরপরই উত্তর বঙ্গোপসাগর সৃষ্টি হয়েছিল বেশ কয়েকটি নিম্নচাপ। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তাল হয়ে ওঠে বঙ্গোপসাগর। ৩০ মে কক্সবাজারের টেকনাফে ১৩৫ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় মোরা। এরপরও ছিল মোরার প্রভাব। কিছুদিন পর স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে প্রচণ্ড বৃষ্টি হয় পার্বত্য চট্টগ্রামে। বৃষ্টিকে ১৩ জুন চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও বান্দরবানে পাহাড়ধসে নিহতের সংখ্যা ছিল শতাধিক। পরের মাস জুলাইয়ে অর্ধেক সময়ে বন্যা দেখা দেয় দেশের উত্তর পশ্চিম, উত্তর পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে।
একমাত্র মে মাস ছাড়া বর্ষাকাল শুরুর আগেও এবার প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। মার্চে ১৫২ শতাংশ, এপ্রিলে স্বাভাবিকের চেয়ে ১০৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়। মার্চ-এপ্রিলের বন্যায় হাওর অঞ্চলে ফসল ও মাছের প্রচুর ক্ষতি হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার মাসেই বেশি বৃষ্টি হয়েছে। জুনে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ দশমিক ৭, জুলাইয়ে ৩২, আগস্টে ৩১ দশমিক ৫ এবং সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন