অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা

করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে ঘরমুখি মানুষের ঢল ঠেকাতে এবার ফেরি চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে ফেরি বন্ধের ঘোষণা দিয়ে যাত্রীদের ঘাট ছাড়তে নির্দেশনা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিসি।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, দিনে এই নৌপথে আর ফেরি চলাচল করবে না। রাতে পচনশীল পণ্যবাহী গাড়ি পার করা হলেও কোনো ধরনের যাত্রী পার করা হবে না। এদিকে ফেরি বন্ধের ঘোষণার পরও হাজার হাজার যাত্রী ফেরিঘাটে অপেক্ষা করছে। ঘরমুখি যাত্রীদের ভিড় শুধু বাড়ছেই।

রবিবার সরেজমিনে দেখা যায়, শিমুলিয়া ঘাটের এক কিলোমিটার আগে চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা যাত্রীবাহী কোনো গাড়ি ঘাটে যেতে দিচ্ছেন না। তবে ঘাট এলাকার আশেপাশের বিভিন্ন পথ ধরে যাত্রীদের আসতে দেখা যায়। চেকপোস্ট দিয়েও পায়ে হেঁটে আসতে দেখা যায় যাত্রীদের।

সকালে শিমুলিয়া থেকে দুটি ফেরিতে প্রায় পাঁচ হাজার যাত্রী পার হওয়ার পর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের উপস্থিতি বাড়তে শুরু করে। ফেরির টার্মিনালে অবস্থান নেন শতাধিক যাত্রী। বিকাল ৩টা থেকে বৃষ্টি শুরু হলে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা বিপাকে পড়েন।

ঘাট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, দুটি ফেরিতে লাশবাহী গাড়ি ও যাত্রী পার করার পর সিদ্ধান্ত হয়েছে দিনে আর ফেরি চলাচল করবে না। বিকাল সাড়ে ৩টায় যাত্রীদের ফিরে যেতে বলে পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন ও ঘাট কর্তৃপক্ষ। মাইকিং করে যাত্রীদের ঘাট ত্যাগ করার অনুরোধ জানানো হয়।

শিমুলিয়া ঘাটের বিআইডাব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক সাফায়েত আহমেদ জানান, দুপুর থেকে ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যেসব পণ্যবাহী যানবাহন পারের অপেক্ষায় আছে এসব রাতে পার করা হবে।

মাওয়া ট্রাফিক পুলিশ ইন্সপেক্টর মো. হিলাল উদ্দিন জানান, সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে ফরিদপুর ফেরিটি সাতটি অ্যাম্বুলেন্সসহ যাত্রী নিয়ে বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এরপর ৯টা ৫৫ মিনিটের দিকে শাহ পরাণ হাজারো যাত্রী ও অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ছেড়ে গেছে। আর সকালে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে কুঞ্জলতা, কুমিল্লা ফেরি আসে শিমুলিয়ায়। শিমুলিয়াঘাট এলাকায় ৩৫০ পণ্যবাহী যানবাহন পারের অপেক্ষায় আছে।

সম্প্রতি দেশে করোনা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করায় সারাদেশে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। সংক্রমণ ও মৃত্যু কিছুটা কমে আসায় বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। ঈদযাত্রা নিরুৎসাহিত করতে সরকার দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ রেখেছে। তবে কোনো বাধাই মানছে না ঘরমুখি যাত্রীরা। যারা যেভাবে পারছে শত ভোগান্তি সহ্য করে বাড়ি যাচ্ছে। এভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঈদযাত্রার কারণে করোনা পরিস্থিতি আবার জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।