অবশেষে মিলল ‘টাইটানিক’-এর সেই দম্পতির আসল পরিচয়!

আজ থেকে ১০৫ বছর আগে আটলান্টিক মহাসাগরের গভীরে তলিয়ে গিয়েছিল পৃথিবীর তৎকালীন বৃহত্তম জাহাজ টাইটানিক। সেই সময়ে জাহাজে কতজন যাত্রী ছিলেন, তা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।

তবে এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, যাত্রী ও জাহাজের কর্মী মিলিয়ে প্রায় ১৫০০ জনকে নিয়ে পাড়ি দিয়েছিল টাইটানিক। তবে ডুবে যাওয়ার মুহূর্তে প্রাণ বাঁচাতে পেরেছিলেন মাত্র ৩০ শতাংশ। বাকি ৭০ শতাংশ মারা যান সে রাতেই।

দুর্ঘটনার সময়ে যাত্রীদের মধ্যে এমন অনেকেই ছিলেন, যারা বিপদের মুহূর্তেও প্রিয়জনকে ছেড়ে যাননি।

এর মধ্যে উল্লেখ্য ছিল এক বৃদ্ধ দম্পতি। জেমস ক্যামেরনের ‘টাইটানিক’ ছবিতেও দেখানো হয়েছে তাদের। সবাই যখন বাঁচার জন্য মরিয়া তখন সেই দম্পতি পরস্পরকে জড়িয়ে শুয়ে রয়েছেন জাহাজের কেবিনে। সমুদ্রের ফুঁসে ওঠা পানি ক্রমাগত ধাক্কা দিচ্ছে তাদের বিছানায়।

টাইটানিকে সেই দম্পতির অস্তিত্ব সত্যিই ছিল, নাকি ওটা কেবলমাত্র সিনেমার জন্যই দেখানো, তা নিয়ে কৌতূহল অনেকেরই রয়েছে।

এতদিনে সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য মিরর’-এ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সেই বৃদ্ধের নাম ইসিডর স্ত্রাউস এবং তার স্ত্রী ইডা স্ত্রাউস। টাইটানিক দুর্ঘটনার ৪১ বছর আগে বিয়ে হয় এই মার্কিন জুটির। ফ্রান্সে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন ওই দম্পতি। লিভারপুল থেকে তারা টাইটানিকে ওঠেন।

দুর্ঘটনার সময়ে ফার্স্ট ক্লাস কেবিনের যাত্রী হওয়ার দরুণ লাইফ বোটে করে পালানোর সুযোগ তাদের সামনেও ছিল। ইডাকে লাইফবোটে ওঠার জন্য আহ্বানও জানানো হয়। কিন্তু সেখানে তার স্বামীর জন্য জায়গা ছিল না বলে ইডা যেতে অস্বীকার করেন। জানা যায়, এরপর আর পালানোর সুযোগ তাদের কাছে আসেনি। সেই সময়ে ইডা তার স্বামীকে বলেছিলেন, ‘‘আমরা একসঙ্গে যখন এতগুলো বছর কাটিয়েছি, মৃত্যু পর্যন্তও একসঙ্গেই থাকব। ’’

এতদিন বাদে সম্পূর্ণ ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আনেন, ইসিডর-ইডার নাতির ছেলে পল কুর্জম্যান। তিনি জানান, ইসিডরের দেহ সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা গিয়েছিল। তবে ইডার দেহ আর পাওয়া যায়নি। সেই সময়ে প্রায় ৬০০০ লোক ইসিডরের শেষকৃত্যে যোগদান করেছিলেন তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। কারণ, ইসিডর ছিলেন মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য। তিনি ডেমোক্র্যাট দলের প্রতিনিধি ছিলেন।