অাদালত থেকে শোডাউন করে ঘরে ফিরলেন খালেদা

জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় হাজিরা শেষে সড়কে শোডাউন করে গুলশানের বাসভবন ফিরোজার উদ্দেশে রওনা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টায় পুরান ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসার মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালত থেকে বের হন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। আদালত থেকে বের হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মোড়ে আসলেই অপেক্ষমাণ নেতাকর্মীরা তার গাড়িবহরে যুক্ত হন। বিকেল ৪টার দিকে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শোডাউন করে সামনে অগ্রসর হন তিনি। গাড়িবহরে নেতাকর্মীরা যুক্ত হওয়ায় রুটে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে গত সপ্তাহে হাইকোর্টের মাজার গেটে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। তবে আজকের চিত্র ছিল একেবারেই ভিন্ন। সকাল থেকে আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের সঙ্গে দায়িত্বরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

খানিক সময়ের জন্য হাইকোর্টের মাজার গেট আটকিয়ে রাখলেও খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়িটি দোয়েল চত্বর অতিক্রম করার কিছুক্ষণ পরই গেট খুলে দেয়া হয়। এ সময় মিছিল স্লোগানে গাড়িবহরের সঙ্গে যুক্ত হন হাইকোর্টের ভেতর অবস্থানরত নেতাকর্মীরা।

পরে হাইকোর্টের সামনে অবস্থিত কদম ফোয়ারা, মৎস্য ভবন মোড়, কাকরাইল মোড় হয়ে হয়ে রূপসী বাংলা হোটেল পর্যন্ত নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ধীরে ধীরে অগ্রসর হন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

হাজারো নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে খালেদা জিয়ার এই প্রতীকী শোডাউনের কারণে ৪০ মিনিট ধরে এ এলাকার বিভিন্ন রুট দিয়ে যানচলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।

গত সপ্তাহেও তিন দিন হাজিরা দিতে বকশীবাজারে এসেছিলেন খালেদা। হাজিরাকে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহে ছাত্রদলের ৫৩ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছিল সংগঠনটির দফতর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটওয়ারী। তবে আজও কয়েকজন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

দুর্নীতির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরার দিন সেখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও বুলেট প্রুফ প্রিজন ভ্যান আনা হয়েছিল। গত সপ্তাহের মতো আজও ছিল কঠোর নিরাপত্তা বলয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা দেয়াকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার বিশেষ জজ আদালত এলাকা ও আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ করে হাইকোর্ট এলাকায় নজরদারি ছিল বেশি। বিশেষ আদালত এলাকায় গিয়ে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিত লক্ষ্য করা গেছে।

গতদিনের মতো আদালতে প্রবেশের পথে স্থাপন করা হয়েছে আর্চওয়ে। এর পাশপাশি পুলিশের হাতে আছে হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরও। আদালত চত্বরে আনা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রিজনভ্যান। ভেতরে আসামির গতিবিধি পর্যবেক্ষণে এর ভেতরে ছিল ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও।

আদালত চত্বরে যে প্রিজন ভ্যানটি আনা হয়েছে সেটির চালক রফিকুল বলেন, ‘ইতালি থেকে তিনটি বুলেট প্রুফ প্রিজনভ্যান কেনা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি দেয়া হয়েছে ডিএমপিকে। অন্যটি গাজীপুর পুলিশকে দেয়া হয়েছে। এসব প্রিজন ভ্যানে ছয় স্তরের নিরাপত্তা আছে।’