‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৭৮২২ জনকে গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনী’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দু’মাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অন্যান্য বিভিন্ন অপরাধে ২ হাজার ৪৫৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। পাশাপাশি এ যাবত পর্যন্ত মোট ৭ হাজার ৮২২ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশন ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা প্রদান প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, মাদক ব্যবসায়ী, অপহরণকারী, চোরাচালানকারী, প্রতারক ও দালাল চক্র, চাঁদাবাজ, ডাকাত, ছিনতাইকারীরা রয়েছে। অভিযানের সময় সেনাবাহিনী দুই মাসে ৩২০টি অবৈধ অস্ত্র ও ৫৬৪ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এ যাবত মোট ৯ হাজার ৩৭০টি অবৈধ অস্ত্র ও ২ লাখ ৮৫ হাজার ৫২ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি জানান, সেনাবাহিনী বিগত দুই মাসে ২৩২টি বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে।
এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন সময়ে যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনী অদ্যাবধি ৪ হাজার ৩৪০ জনকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। যার মধ্যে ৪৩ জন এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহতদের সম্মানে সেনাবাহিনী গত ২৩ মার্চ সেনামালঞ্চে ইফতার ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করে। ২৫ মার্চ আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে আহত এবং শহিদ পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা আয়োজন করা হয়। সেনাবাহিনী প্রধান উপস্থিত থেকে সবার খোঁজ-খবর নেন। চিকিৎসাসহ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম আরও জানান, বিগত সময়ে শিল্পাঞ্চল গুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী ১৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। পাশাপাশি ৩১ বার বিভিন্ন মূল সড়ককে অবরোধ থেকে অবমুক্ত করেছে। শিল্পাঞ্চলে জাতীয় নিরাপত্তা বিধানের সময় গত ৯ এপ্রিল নারায়নগঞ্জের রবিন টেক্স গার্মেন্টসে অস্থিরতা প্রশমনের সময় নিয়োজিত সেনাসদস্যরা কিছু গার্মেন্টস শ্রমিকের ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় আক্রান্ত হয়। এতে ২৪ জন সেনাসদস্য আহত হয়। আহতদের মধ্যে ২০ জনকে সিএমএইচ এ ভর্তি হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। ঈদ পূর্ব গার্মেন্টসে অস্থিরতা মোকাবিলায় সেনাবাহিনী মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ, মন্ত্রণালয়, শিল্পাঞ্চল পুলিশ ও বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে সমন্বয় সাধন করে শ্রমিকদের বেতন ও ভাতা পরিশোধে বিশেষ ব্যবস্থা করে যা শ্রমিকদের মাঝে ঈদ পূর্ববর্তী গতানুগতিক অস্থিরতা দুর করতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
এছাড়া এসব কাজের পাশাপাশি সেনাবাহিনী দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখাসহ বিদেশি কূটনীতিক ব্যক্তি ও দূতাবাসগুলোর সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং কক্সবাজার জেলায় এফডিএমএন ক্যাম্প এলাকার নিরাপত্তা বিধান করার দায়িত্বও সুষ্ঠুভাবে পালন করে যাচ্ছে।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন