‘আইনি প্রক্রিয়ায় জামিন পেতে পারেন খালেদা’
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ড হওয়াকে কেন্দ্র করে একটি প্রতিক্রিয়াশীল মহল ধুম্রজাল সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে বলে মন্তব্য করেছেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি।
তিনি বলেন, এখন আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়া আপিল করবেন। এরপর আদালত বিবেচনা করবে তাকে জামিন দেয়া যায় কিনা। তবে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তিনি জামিন পেতে পারেন।
রোববার দুপুরে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলানায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের এই সদস্য সচিব।
খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়ার বিষয় নিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, আবদুল মতিন খসরু, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবুদল বাসেত মজুমদার, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, নুরুল ইসলাম সুজন এমপি, আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহ সভাপতি মো.অজি উল্লাহ প্রমুখ।
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমাদের দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা রাষ্ট্রের একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব। যে জাতি যত বেশি করে আইনের শাসন ভোগ করেছে সেই জাতিকেই তত বেশি সভ্য মনে করা হয়।
সংবিধানের উদ্বৃতি দিয়ে ব্যারিস্টার তাপস বলেন, ধনী, গরিব সাবেক রাষ্ট্রপতি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, প্রভাবশালী ব্যাক্তিত্ব কারো সঙ্গে কোনো ভেদাভেদ করা যাবে না সবাই সমান। তিনি বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেয়েছে। দেশে যে অপসংস্কৃতি ছিল আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর অপসংস্কৃতির অবসান হয়েছে। আমরা মনে করি এবং যতটুকু আমরা এজাহার এবং চার্জশিট থেকে দেখেছি এ মামলাটি অত্যন্ত পরিষ্কার মামলা। তারপরও দীর্ঘসময় কালক্ষেপণ করা হয়েছে। এ মামলা নিষ্পত্তিতে।
ফজলে নূর তাপস বলেন, যদিও এ মামলার উৎপত্তি শুরু সেই ১৯৯১ সালে। এর মাঝে বিদেশ থেকে যে টাকা আনা হয়েছে সেটাকে প্রধানমন্ত্রী এতিম তহবিল হিসেবে সেই ফান্ড গঠন করে সেখানে টাকাটি প্রথমে রাখা হয়। এর পরবর্তীতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট সৃষ্টি করে সেই টাকাটি সেখানে স্থানান্তর করা হয়। সেই ট্রাস্ট থেকে ২০০৭ সাল থেকে কাজী সলিমুল হক, তারেক রহমান, মুমিনুর রহমান এবং শরফুদ্দীন নামে ব্যক্তিদের নামে টাকাটি ট্রান্সফার করা হয়। ২ কোটি টাকার উর্ধে ব্যাক্তিগতভাবে আত্মসাৎ করা হয়।
তিনি বলেন, আমরা জানি একটি ট্রাস্ট করতে হলে ট্রাস্টি বোর্ড থাকে এবং বেনিফিশিয়ারি জন্য সেই টাকা ব্যয় করা হয়ে থাকে। এতিম তো দূরে থাক কোনও গরিব ব্যক্তির জন্য সেই ট্রাস্টের টাকা ব্যবহার করা হয়নি উল্লেখ করে তাপস বলেন, শরফুদ্দীন, তারেক রহমানসহ গংরা তারা এ টাকাটি নিজেদের নামে আত্মসাৎ করেছেন।
ব্যারিস্টার তাপস আরও বলেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। কিন্ত আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, এ রায়কে সেই মহল একটি রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে বহার করছে। দেশে বিশৃংখলা সৃষ্টির প্রচেষ্টা চলমান। তারা ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে দেশকে যে বিশৃংখলার মধ্যে নিয়ে গিয়েছিল সেই রকম একটি ষড়যন্ত্রে তারা লিপ্ত হয়েছে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। ডিভিশন দেয়াকে নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করা হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ডিভিশন তিনি প্রাপ্য। সে প্রাপ্য পরিপূর্ণভাবে তাকে দেয়া হয়েছে। সুতরাং নতুন করে ধূম্রজাল ষড়যন্ত্র সৃষ্টির অবকাশ নেই।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নৈতিক স্খলনজনিত কারণে অভিযুক্ত হয়ে কারও দুই বছরের অধিক সাজা হলে সাজার পরবর্তী পাঁচ বছর তিনি নির্বোচনে অযোগ্য হবেন। এখন হাইকোর্টে আপিল হবে। তিনি জামিন আবেদন করতে পারবেন। তিনি মামলা স্থগিতও চাইতে পারেন। এ অবস্থায় কেউ যদি আপিল করে আপিল চলা অবস্থায় একেবারে বিচার শেষ না হওয়া পযন্ত তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। কাজেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে কোনও রকমের বিতর্ক সৃষ্টি করা ঠিক না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার আপিলে যদি সাজা টিকে যায়, তখন যদি তিনি সংসদ সদস্য হন, তাহলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে ওই আসনে উপনির্বাচন হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন