আগুনে পোড়ানো ছাড়াই স্বয়ংক্রিয় মেশিনে তৈরী হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ‘ব্লক ইট’
জমির উর্বর কাঁচা মাটি, কাঠ-কয়লার ভাটার আগুনবিহীন স্বয়ংক্রিয় মেশিনে প্রস্তুত হয় পরিবেশবান্ধব অত্যাধুনিক ব্লক ইট। সাধারণ ইটের চেয়ে ব্লক ইট আকারে বড় হওয়ায় দ্রুত স্থাপনা নির্মাণ করা যায়। এতে সময় ও খরচ দুই’ই বাঁচে।
ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে সদর উপজেলার রঘুরামপুর এলাকায় এইচ এন্ড এম ইকো ব্রিকসে তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ইট। চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে এই ব্রিকস কারখানায় পরিবেশবান্ধব ‘হলো ব্লক ’ ও ‘সলিড কনক্রিট’ ইট তৈরি শুরু হয়।
বুধবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্বয়ংক্রিয় মেশিনে প্রস্তুত করা হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট প্রস্তুতের জন্য সিমেন্ট, লাল বালু, সাদা বালু, পাথরের ডাস্ট, ফ্লাই এ্যাশ মেশিনে মিকচার করা হয়। জমাট বাঁধার জন্য দেয়া হয় এডড মিকচার। হপার মেশিনে পরার পর অটোমেটিক কনক্রিট মেশিনে প্রক্রিয়াজাত হয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই বেরিয়ে আসে ব্লক ইট। পরে কাঠের তাকে সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রোদে শুকানো হয়। এই ইট ১২ দিন কিউরিং করার পর বিক্রির উপযোগি হয়।
এইচ এন্ড এম ইকো ব্রিকসে ১৬ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য, ৮ইঞ্চি প্রস্ত আর সাড়ে ৪ ইঞ্চি পুরুত্বের ১১ কেজি ওজনের ‘ ব্লক ইট’ আর ৯.৬ইঞ্চি দৈর্ঘ্য, ৪.৬ ইঞ্চি প্রস্ত ও ২.৮ ইঞ্চি পুরুত্বের সাড়ে ৩ কেজি ওজনের ‘সলিড কনক্রিট’ ইট তৈরি করা হয়। ‘হলো বøক’ ইট প্রতিটি ৫০ টাকা দরে ও ‘সলিড’ ইট প্রতিটি ১৩ টাকা দরে বিক্রয় করা হয়।
পরিবেশবান্ধব ইট গাঁথুনির কাজে ব্যবহারের আগে সাধারণ ইটের মতো ভেজাতে হয় না। এতে পানির অপচয়রোধ হয়। সাধারণ ইটের গাঁথুনিতে ঘন পুরুত্বের প্লাস্টার করতে হয় কিন্তু পরিবেশবান্ধব ইটে কম পুরুত্বের প্লাস্টারের প্রয়োজন হয়। প্লাস্টার ছাড়াও নির্মিত স্থাপনাগুলোতে সরাসরি রং করা যায়। আর ‘হলো ব্লক ’ ইট দিয়ে নির্মিত ভবন ও স্থাপনা করা হলে ইলেকট্রিক ও স্যানিটারি পাইপ বসানোর সময় দেয়াল কাটা লাগে না বলে জানিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।
অটোমেটিক কনক্রিট মেশিনের অপারেটর মোসাদ্দেক আলী বলেন, হাতের কোন স্পর্শ ছাড়াই স্বয়ংক্রিয় মেশিনে পরিবেশবান্ধব ইট প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রতিদিন আমরা দুই ধরনের প্রায় ৭/৮ হাজার ইট প্রস্তুত করছি। দ্রুতই আরো বেশি ইট উৎপাদনে যাবো আমরা।
স্থানীয় বাসিন্দা আহাম্মদ আলী বলেন, আমি বাড়ি নির্মাণের জন্য এই কারখানায় পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট কিনতে এসেছি। সাধারণ ইটের গাঁথুনির তুলনায় এই ব্লক ইট পরিমাণে কম লাগে। ইটের আকার বড় হওয়ায় দ্রুত কাজ শেষ করা যায়। সময় ও লেবার খরচ কম লাগে।
এইচ এন্ড এম ইকো ব্রিকসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান বলেন, সনাতন পদ্ধতিতে ইটভাটা করলে কৃষি জমির উর্বরতা নষ্ট ও পরিবেশের ক্ষতি হয়, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকে মানুষজন। কিন্তু পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট তৈরিতে মাটি লাগে না। কারখানায় কয়লা, গ্যাস কিংবা কাঠ পোড়ানোরও প্রয়োজন হয় না। ব্লক ইট পরিবেশবান্ধব ও ভূমিকম্প সহনশীল। কারখানা শুরুর পর থেকেই ক্রেতাদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন