‘আমি হামলাকারীকে দেখেছি, শরীরে মাথা ছিল না’
যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার শহরে একটি কনসার্টে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীকে দেখেছেন বলে দাবি করেছেন প্রত্যক্ষদর্শী এক নারী। তিনি জানিয়েছেন, বোমা হামলার পর হামলাকারীর শরীরে মাথা ছিল না।
এদিকে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, হামলাকারীর পা ছাড়া শরীরের আর কিছুই অবশিষ্ট ছিলনা। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এমনটাই।
স্থানীয় সময় গত সোমবার রাতের ওই হামলায় নিহত হয়েছেন ২২ জন। এছাড়া আহত হয় আরো ৫৯ জন। পুলিশের দাবি হামলাকারী সালমান আবেদি নামে ম্যানচেস্টারের এক তরুণ।
আর হামলার আগে সালমানকে দেখেছিল বলে দাবি করেছেন ইমা জনসন নামে ল্যাঙ্কাশায়ার শহরের এক বাসিন্দা। ইমা জানান, সেদিন ম্যানচেস্টার অ্যারেনায় কনসার্ট দেখতে এসেছিল তাঁর দুই সন্তান। আর তাতের আনতে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। আর অ্যারেনার বাইরের হলরুমে তিনি হামলাকারীকে দেখেন বলে দাবি করেছেন।
ইমা জানান, বোমা হামলাকারীকে তিনি বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ আগে দেখেছিলেন। কনসার্টে আগতদের মধ্যে বেশির ভাগই শিল্পী আরিয়ানা গ্রান্ডের প্রিয় গোলাপি জামা পরে এসেছিল। কিন্তু হামলাকারী একটি লাল জামা পরেছিল। এ কারণেই হামলাকারীকে আলাদাভাবে চিনতে পেরেছেন বলে জানান তিনি।
ইমা আরো বলেন, ‘আমরা ছেলেমেয়ের নিতে সেখানে গিয়েছিলেম। যানজট এড়ানোর জন্য দর্শনার্থীরা ততক্ষণে অ্যারেনা থেকে বের হওয়া শুরু করেছে। তাই আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম, যাতে আমাদের সন্তানরা আমাদের খুঁজে পায়।’
‘লোকজন বিভিন্ন রঙের পোশাক পরে অ্যারেনা থেকে বের হচ্ছিল। তারা আরিয়ানার পছন্দের সাদা, কালো ও গোলাপি রঙের পোশাক পরেছিল। কিন্তু একজন উজ্জ্বল লাল রঙের জামা পরে ছিল। ওই রংটা তাঁকে আলাদাভাবে চিনতে সাহায্য করছিল।’ এর কয়েক মুহূর্ত পরে বোমার বিস্ফোরণ হয় বলে জানান ইমা।
ওই নারী প্রত্যক্ষদর্শী আরো বলেন, চারদিকে লাশ পড়ে ছিল। সেখানে হামলাকারীর মাথাবিহীন শরীর পড়ে ছিল। সে এক ভয়াবহ ব্যাপার।
এদিকে ফিল ডিক নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, চারিদিকে ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছিল। আমি মেয়েদের খুঁজছিলাম। সবার মধ্যে হামলাকারীর লাশ পড়ে ছিল। তাঁর পা ছাড়া কিছুই ছিল না।
এদিকে হামলার পর যুক্তরাজ্যজুড়ে আরো হামলার আশঙ্কা করছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার সম্ভাবনা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।গত এক দশকের মধ্যে এই প্রথম হামলার সর্বোচ্চ শঙ্কা জারি করা হলো।
হামলার পর যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সন্দেহের তীর যায় ম্যানচেস্টারের বাসিন্দা লিবিয়ার বংশোদ্ভূদ সালমান আবেদি নামে এক তরুণের দিকে। তবে হামলাকারী একা ছিলেন, নাকি তাঁর সঙ্গে আরো সহযোগী ছিল তা জানা যায়নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আরো হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মে।
সোমবার রাতে ওই বোমা হামলায় নিহত হন ২২ জন। আহন হন কমপক্ষে ৫৯ জন। এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছে। ওই কনসার্টে অংশ নিয়েছিলেন মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী আরিয়ানা গ্রান্ডে। তবে হামলায় তাঁর কোনো ক্ষতি হয়নি। এদিকে হামলার পর দায় স্বীকার করে বার্তা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
এ বিষয়ে মার্ক রোউলি নামে পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামলাকারীদের ধরতে তদন্ত খুব দ্রুত এবং ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে ঘটনাস্থলেই নিহত সন্দেহভাজন হামলাকারী একা ছিলেন, নাকি তাঁর সঙ্গে আরো কেউ ছিল তা জানা যায়নি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন