আরাভকে দেশে ফিরিয়ে আনা সহজ হবে: আইনজীবী
পলাতক থাকায় অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া রবিউল ইসলাম আপন ওরফে আরাভ খানের সাজা কার্যকর করা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। তবে সরকারি কৌঁসুলির মতে, ইন্টারপোলের মাধ্যমে আরাভকে দেশে ফিরিয়ে আনা সহজ হবে।
মঙ্গলবার (৯ মে) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মুর্শিদ আহাম্মদ আরাভকে ১০ বছরের সাজা দিয়ে অস্ত্র আইনে মামলার রায় ঘোষণা করেন। এতে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডও দেয়া হয়েছে।
রায়ে বিচারক বলেন, প্রসিকিউশন সন্দেহাতীতভাবে দুবাইয়ে বসবাসকারী আরাভ খানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। পলাতক আসামিকে গ্রেফতার বা আত্মসমর্পণের দিন থেকে তার শাস্তি কার্যকর হবে বলেও রায়ে জানিয়েছেন বিচারক।
এরপরই বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু।
তিনি জানান, আরাভ খান পলাতক থাকায় সরকার তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। এ রায়ের ফলে তাকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আরাভ খান ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতে তার শ্বশুর সেকেন্দার আলীর মগবাজারের বাসায় যান। সেদিন একটি গুলিভর্তি রিভলবারসহ শ্বশুরের বাসার সামনে থেকে গ্রেফতার হন তিনি।
এ ঘটনায় আরাভের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করেন ডিবি পশ্চিমের ‘গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিম’-এর তৎকালীন উপ-পরিদর্শক সুজন কুমার কুণ্ডু। আসামি রবিউল ইসলাম আপনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২০১৫ সালের ১ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির উপ-পরিদর্শক শেখ হাসান মুহাম্মদ মোস্তফা সারোয়ার।
একই বছরের ১০ মে আদালত রবিউলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্যদিয়ে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এ মামলায় ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ জামিন পান রবিউল। এর পর পলাতক থাকায় ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম ২০১৮ সালে পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যা মামলার ফেরারি আসামি। তিনি দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে গিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে সেখানকার পাসপোর্ট নেন, যাতে নাম দেন আরাভ খান।
দুবাইয়ে গত ১৫ মার্চ এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে আরাভ জুয়েলার্স উদ্বোধন করা হয়। এ উপলক্ষে ৬০ কেজি সোনা দিয়ে বানানো হয় বাজপাখির আদলে লোগো, যা তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ক্রীড়া ও বিনোদন জগতের অনেক তারকাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দিয়েছিলেন আরাভ খান। তখনই তাকে শনাক্ত করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
গত ২৩ মার্চ রাতে আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা (ইন্টারপোল)। তালিকায় ৬৩তম বাংলাদেশি তিনি। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে মোস্ট ওয়ান্টেডের তালিকায় তার নাম, ছবি ও পরিচয় সংযুক্ত করে প্রকাশ করা হয়েছে।
ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে তার নাম লেখা হয়েছে রবিউল ইসলাম রবিউল। বয়স ৩৫ বছর। জাতীয়তা দেখানো হয়েছে বাংলাদেশি। তার জন্মস্থান বাগেরহাট।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন