আসছে তৃতীয় মার্কিন রণতরী, স্কাড ছুড়ল উত্তর কোরিয়া
আবার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির কাংওন প্রদেশ থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বিমানবাহী রণতরী পাঠানোর সিদ্ধান্তের পর পরই এই ক্ষেপণাত্র ছুড়ল কোরিয়া।
স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৫টা ৩৯ মিনিটে কাংওন প্রদেশের ওনসান শহর থেকে ছোটপাল্লার ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। সেটি কোরিয়া উপদ্বীপের পূর্ব দিকে উড়ে যায় বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
এর আগে বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস নিমিৎজকে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে এরই মধ্যে ইউএসএস কার্ল ভিনসন ও ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যান নামে আরো দুটি বিমানবাহী রণতরী মোতায়েন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করতেই এ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘স্কাড’ শ্রেণির। সেটি প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার উড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রে এই ক্ষেপণাস্ত্রটির খুঁটিনাটি সম্পর্কে জানতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানায় তারা।
এদিকে জাপান জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি তাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভেতরে পড়ে। দেশটির প্রেসিডেন্ট শিনজো অ্যাবে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
ইয়োশিহিদে সুগা নামের জাপানের এক সচিব জানান, এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র বিমান ও নৌযান চলাচলের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে। এ ছাড়া এতে জাতিসংঘের নিয়ম-নীতিরও লঙ্ঘন হয়। উত্তর কোরিয়ার এ ধরনের উসকানিমূলক আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।
উত্তর কোরিয়াকে রুখে দিতে যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া জাপানের নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করবেন বলে জানান ইয়োশিহিদে সুগা।
চলতি মাসের ২১ তারিখে ‘পুকগুকসং-২’ নামে একটি মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে উত্তর কোরিয়া। ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ৩৬০ কিলোমিটার অতিক্রম করে জাপান সাগরের দিকে উড়ে যায় বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। এর আগে ১৬ তারিখে হোয়াসং-১২ নামে পরমাণু অস্ত্রবাহী একটি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায় দেশটি।
এর আগে গত মাসে দক্ষিণ পিয়ংইয়ংয়ের একটি এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হয়। তবে সেটি কোরিয়ার সীমান্ত পার হওয়ার আগেই আকাশে বিস্ফোরিত হয়।
এ ছাড়া জাপান সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে উত্তর কোরিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের বৈঠকের ঠিক আগমুহূর্তে ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়।
মার্চে জাপান সাগরের দিকে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে উত্তর কোরিয়া। ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে তিনটি জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পড়ে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে পিয়ংগান প্রদেশে অবস্থিত বাঙ্গিয়ন বিমানঘাঁটি থেকে জাপান সাগরের দিকে পরীক্ষামূলকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে উত্তর কোরিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর সেটিই ছিল দেশটির প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন জানিয়েছিলেন, খুব তাড়াতাড়ি পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে যাচ্ছেন তাঁরা।
গত বছর বেশ কয়েকবার পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটায় উত্তর কোরিয়া। পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জেরে ২০০৬ সাল থেকেই উত্তর কোরিয়ার ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন