‘লাল তালিকার’ ৫৯ বাংলাদেশি
বিভিন্ন দেশে পলাতক গুরুতর অপরাধীদের ধরতে রেড নোটিশ জারি করে থাকে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল। এই তালিকায় দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের ৫৯ ব্যক্তি রয়েছেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী, যুদ্ধাপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু হত্যা, ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে জড়িতরাও রয়েছেন তালিকায়।
ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে এসব অপরাধীর নাম, ছবি ও অপরাধের ধরণ উল্লেখ করে তাদের ধরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কিন্তু এসব অপরাধীদের গ্রেফতার করে দেশে ফেরানো দূরের কথা, এখন পর্যন্ত অনেকের অবস্থানই শনাক্ত করতে পারেনি অঅন্তর্জাতিক সংস্থাটি। এতে করে ইন্টারপোলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
পুলিশ সদরদপ্তরের ইন্টারপোল ডেস্ক সূত্রে জানা গেছে, ইন্টারপোল যাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করে, তারা সবাই শীর্ষ অপরাধী ও পলাতক। সংশ্লিষ্ট দেশের সহায়তায় তাদের অবস্থান শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালায় ইন্টারপোল। গ্রেপ্তারের পর আসামিদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের ৫৯ ব্যক্তির নামে সংস্থাটির রেড নোটিশ ঝুলছে। এখন পর্যন্ত ইন্টারপোল এদের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য বাংলাদেশকে জানাতে পারেনি।
চলতি বছরের মার্চে ঢাকায় ইন্টারপোলের সহায়তায় আন্তর্জাতিক পুলিশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সংস্থাটির মহাসচিব ড. জারগেন স্টোকের কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিষয়টি তোলা হয়। এদের মধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের ফেরত আনার বিষয়ে ইন্টারপোলের কার্যকর সহায়তা চাওয়া হয়। কিন্তু এরপর বিষয়টি সেখানেই থেমে আছে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘অপরাধীরা দেশ থেকে পালিয়ে গেলে তাদের ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হয়। আমরাও বিভিন্ন সময় তাদের সহায়তা চেয়েছি। সংস্থাটির আরও কার্যকর সহায়তা প্রত্যাশা করছি।’
ইন্টারপোলের রেড নোটিশে যারা আছেন:
বাংলাদেশের ৫৯ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি রয়েছে। এরা হলেন- সুব্রত বাইন, কালা জাহাঙ্গীর, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, হারিস আহমেদ, নবী হোসেন, জিসান, খন্দকার তানভীরুল ইসলাম জয়, শামীম আহমেদ, মোল্লা মাসুদ, শাহাদাত হোসেন, নাসিরুদ্দিন রতন, প্রশান্ত সরদারের মতো শীর্ষ সন্ত্রাসীর।
প্রতারণা, খুন ও বিস্ফোরণের অপরাধে জড়িতদের মধ্যে রয়েছেন- আতাউর রহমান, মাহমুদ চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম, আমিনুর রসুল, জাফর আহমেদ, আব্দুল জব্বার, মোহাম্মদ তাজউদ্দিন মিয়া, তৌফিক আলম, খোরশেদ আলম, মিন্টু, চাঁন মিয়া, সাজিদ সুলতান, হারুন শেখ, মনোতোষ বসাক, আমিনুর রহমান, গোলাম ফারুক অভি, আমান উল্লাহ শফিক, সুরত আলম আহমেদ কবীর, মোবারক হোসেন, রফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের ৮ নেতাকর্মী খুন মামলার আসামি শিবির নেতা সাজ্জাদ হোসেন খান, কিসমত হাসেম, আনসার নাজমুল, শরীফুল হোসেন আহমেদ, মো. ইউসুফ, নাঈম খান ইকরাম, দিপু নুরুল, মজনু আহমেদ, হোসেন মকবুল ও মিন্টু সালাউদ্দিন।
এছাড়া ইন্টারপোলের রেড নোটিশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল খন্দকার আবদুর রশিদ, লে. কর্নেল শরিফুল হক ডালিম, লে. কর্নেল এএম রাশেদ চৌধুরী, এইচবিএম নূর চৌধুরী, ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন খানের নাম রয়েছে।
২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় রেড নোটিশে আছেন, সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিস চৌধুরী ও রাতুল আহমেদ বাবু।
অন্যদিকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রেড নোটিশে রয়েছেন, সৈয়দ মো. হাছান আলী, সৈয়দ মো. হোসেন, চৌধুরী মঈনউদ্দিন, জাহিদ হোসেন খোকন, আশরাফুজ্জামান খান, আব্দুল জব্বার, আবুল কালাম আজাদ ও সাজ্জাদ হোসেন খান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন