সারা দেশে উপবৃত্তি পাচ্ছে না প্রাথমিকের প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী
সারা দেশে প্রাথমিকের প্রায় দুই লাখ স্কুল শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পাচ্ছে না । দেশের বিভিন্ন উপজেলার ৭৭টি স্কুলে এই শিশুরা অধ্যয়ন করছে। উপবৃত্তি প্রকল্প পরিচালকের অবহেলা ও অর্থ আত্মসাতে স্কুল শিক্ষকদের জড়িত থাকায় এই শিশুরা উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, সারা দেশে প্রাথমিক পর্যায়ের উপবৃত্তি উপকারভোগী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক উপবৃত্তি প্রকল্পের পরিচালক মহেশ চন্দ্র রায় বলেন, মোবাইল ব্যাকিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে বৃত্তির অর্থ পৌঁছে যাচ্ছে। নানা জটিলতার কারণে ৭৭টি স্কুলের দুই লাখ শিশুকে বৃত্তির আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে জুলাই থেকে উপবৃত্তির আওতায় সকল পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষার্থীদের আনা হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর বিভিন্ন জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠে। বিষয়টি তদন্তে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
সিরাজগঞ্জ, মাদারীপুর ও কুমিল্লা জেলার বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায় তদন্ত কমিটি। স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা অর্থ আত্মসাতের মূল নায়ক বলে কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এরপর অর্থ আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরকে ২০১৬ সালের ২৯ নভেম্বর চিঠির মাধ্যমে নির্দেশনা দেয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রালয়ের যুগ্ম সচিব নেছার আহমদের স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনার সাত মাস পার হলেও তাদের বিরুদ্ধে উল্লেখ্যযোগ্য কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে উপবৃত্তি প্রকল্প পরিচালক মহেশ চন্দ্র রায় বলেন, মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অর্থ আত্মসাতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা স্থানীয় পর্যায়ে নির্দেশনা দিয়েছি। কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে।
তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্কুল শিশুদের অর্থ আত্মসাৎকারী দু-একজনের বিরুদ্ধে নামেমাত্র জরিমানা করা হলেও অভিযোগ প্রমাণিত অনেক শিক্ষক এখনো নিজ কর্মস্থলে বহাল রয়েছেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই তদন্ত প্রতিবেদনে উপবৃত্তি প্রকল্পের পরিচালককে আরও সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
পরামর্শে বলা হয়েছে, প্রতি জেলায় কর্মরত মনিটরিং কর্মকর্তারা যাতে স্ব-স্ব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন তা তাকে আরও নিবিড়ভাবে তদারকি করতে হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, মহেশ চন্দ্র রায় একসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থ ও সংগ্রহ বিভাগের পরিচালক এবং প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। তার এই দ্বৈত দায়িত্ব পালনে উপবৃত্তির কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন