রাজউক, পিডাব্লিউডি এবং গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরে কোনো দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার স্থান হবে না উল্লেখ করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স। কোনো হুমকি ধামকি বা ক্ষমতা দেখিয়ে কাজ হবে না। উপরে আল্লাহ, নিচে শেখ হাসিনা, মাঝে আর কেউ নেই।

শুক্রবার (২১ জুন) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত মিট দ্যা রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

পূর্তমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রী হিসেবে আমি দায়িত্ব নেয়ার আগে কি হয়েছে জানি না, তবে দায়িত্ব নেয়ার পর দুর্নীতিগ্রস্থ রাজউক, পিডাব্লিউডি এবং গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের অভিযুক্ত অসংখ্য কর্মকর্তার লোভনীয় পোষ্টিং থেকে সরিয়ে দিয়েছি। এজন্য অনেক জায়গা থেকে ক্ষমতাধরদের ফোন পেয়েছিলাম, আর বেশি তদবিরের কারণে তাদেরকে কাছে রাখতে পারিনি,খাগড়াছড়িতে বদলি করেছি।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো মন্ত্রণালয় নিজের প্রতিষ্ঠানে অর্ধশত কর্মকর্তাকে দুর্নীতিবাজ হিসেবে উপস্থাপন করে মামলা করেছে, এমন রেকর্ড নেই। অথচ আমরা এফ আর টাওয়ারের ঘটনার পর তদন্ত করে রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৬২ জন কর্মকর্তকে অভিযুক্ত করে তাদের বিচারের আওতায় এনেছি।

রাজধানীতে অবৈধ ভবন চিহ্নিত করতে অভিযান চালানোর পর এ পর্যন্ত ১৮১৮টি বাড়ি চিহ্নিত করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এসব ভবনের একটিও কোনোভাবে ছাড় পাবে না, ছাড় দেয়া হবে না। তাদেরকে নিয়মের মধ্যে আসতেই হবে। একটি বাড়ি বা ভবনকে আমরা আইনের বাইরে রাখতে চাই না।

জীবনের মূল্যের চেয়ে কোনো ব্যক্তির অবৈধ ভবন নির্মাণ করে আয় করা বড় নয় উল্লেখ করে পূর্তমন্ত্রী বলেন, এফ আর টাওয়ারের মতো ঘটনার পূনরাবৃত্তি হোক তা আমরা কেউই চাই না। অবৈধ ভবন চিহ্নিত করা হয়েছে, এখন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে তিনি বলেন, পুরান ঢাকাকে রাতারাতি বদলে দেয়া যাবে না। সেখানে শৃঙ্খলা ফেরাতে একটু সময় লাগবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শ ম রেজাউল করিম বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর শুনেছি, দীর্ঘ দিন ধরে লোভনীয় টেবিলে পোষ্টিং নেয়া কর্মকর্তাদের বদলি করা যায় না। তারা অন্য টেবিলেও যেতে চান না। রাজউকে আমি এমন কয়েকজনের টেবিল পরিবর্তনের নির্দেশ দেয়ার পর দেখি তা কার্যকর হচ্ছে না। পরে আমি নোটিশ ইস্যু করলাম। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দপ্তর পরিবর্তনের নির্দেশ দেয়ার পর দেখি ৩ ঘণ্টার মধে তা কার্যকর হয়েছে।

গণমাধ্যম কর্মীদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ তুলে ধরার আহবান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত রাজউক, গৃহায়ন ও পিডাব্লিউডির অনেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জাতীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিকে প্রকাশিত সংবাদ আমলে নিয়ে তদন্ত করে শাস্তিমূলক হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে শ ম রেজাউল করিম পেশাদার সাংবাদিক সাগর-রুনির নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শুধু তদন্ত রিপোর্টই নয়, প্রকৃত হত্যাকারীদের গ্রেফতারের পর দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান।