একই মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়া ভাইরা খেলেছেন ভিন্ন দেশের হয়ে!
বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের মানুষের ধর্ম বর্ণ ভিন্ন হলেও ফুটবল মানুষকে একত্রিত করতে পেরেছে। ছেলে-মেয়ে, শিশু-বৃদ্ধ, কৃষ্ণাঙ্গ-শ্বেতাঙ্গ, ধনী-গরিব। শোক-দুঃখ, সব ভুলিয়ে দিতে পারে একমাত্র ফুটবলই। ফুটবল খেলা জীবন্ত ও প্রাণশক্তিতে ভরপুর তো বটেই, বিনোদন হিসেবেও অতুলনীয়।
ফুটবলের উন্মাদনা-রোমাঞ্চের পাশাপাশি খেলাটির প্রতি মানুষের অনেক আবেগ। অনেকের কাছে পানাহারের মতোই মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
একই মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়া ভাইদের মধ্যে বেশ কয়েকজন খেলেছেন ভিন্ন দেশের হয়েও এমনটাও উদাহরণ রয়েছে। প্রতিনিধিত্ব করেছেন নিজ নিজ দলকে। এমনকি খেলেছেন একে অপরের বিপক্ষেও। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এমন পাঁচটি পরিবারের গল্প এক নজরে দেখা নেয়া যাক।
পগবা:
ফুটবল বিশ্বের অন্যতম সেরা তারকা পল পগবা। ২০১৬ সালে বিশ্বের জুভেন্টাস থেকে ৮৯ মিলয়ন পাউন্ডে রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেন।
১৯৯৩ সালে ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সে সূত্রে জাতীয় দলের সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হিসেবে খেলছেন এ তারকা।
মজার ব্যাপারটি হচ্ছে তার থেকে তিন বছরের বড় আপন জমজ ভাই মাথিয়াস পগবা ও ফ্লোরেন্টিন পগবা ১৯৯৩ সালে পশ্চিম আফ্রিকার গিনিতে জন্মগ্রহণ করেন। তারা দুজনই গিনি জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন।
আলকানতারা:
ব্রাজিলের সাবেক ফুটবলার ও ম্যানেজার মাজিনহোর বড় ছেলে থিয়াগো আলকানতারা। বাবা ইতালির ক্লাব উনিয়ন স্পোরটিভা লিসির হয়ে খেলার সময় ১৯৯১ সালে জন্ম নেন তিনি। পাঁচ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে স্পেনে পাড়ি জমান। যদিও ব্রাজিলের ক্লাব ফ্লেমেনগোরতে চার বছর বয়সে থেকেই আশা যাওয়া শুরু করেন তিনি।
২০০৫ সালে বার্সেলোনা প্রথমবারের মতো খেলেছেন তিনি। এর পর পর্যায়ক্রমে স্পেনের অনূর্ধ্ব ১৬ থেকে ২১ পর্যন্ত খেলেন তিনি। জাতীয় দলে খেলেন তিনি। বর্তমানে জার্মানক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে খেলছেন তিনি।
অন্যদিকে ১৯৯২ সালে ব্রাজিলে জন্ম নেয়ো তার ছোট ভাই রাফিনা আলকানতারা বর্তামানে বার্সার হয়ে খেলছেন। বড় ভাই থিয়াগোর মতো স্পেনের অনূর্ধ্ব ১৬ থেকে ১৯ পর্যন্ত খেলেন তিনি। তবে ২০১৩ সলের ব্রাজিল অনূর্ধ্ব ২০ দলে সুযোগ পান। ২০১৫ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় তার।
ভিয়েরি:
ক্রিশ্চিয়ান ভিয়েরি ফিফার ঘোষণা করা সেরা ১০০ ফুটবলারের মধ্যে অন্যতম। ১৯৭৩ সালে ইতালির বলগনায় জন্ম নেন তিনি। পরে পরিবারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া চলে যান সেখানেই ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন। ১৯৯২ সালে ইতালির অনূর্ধ্ব ২০ দলে সুযোগ পান। ১৯৯৭ সালে জাতীয় দলের জার্সি পড়েন তিনি।
১৯৭৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার জন্ম নেন ক্রিশ্চিয়ানের ছোট ভাই মাস্সিমিলিয়ানো ভিয়েরি। যিনি ম্যাক্স ভিয়েরি নামেও পরিচিত। ইতালিয়ান সিরি আ তে ক্যারিয়ার গড়লেও ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলে অভিষিক্ত হন তিনি।
জাকা:
১৯৯১ সালে সুইজারল্যান্ডে জন্ম নেন তাউলেন্ত জাকা। তার এক বছরের ছোট গ্রানিত জাকা দুই ভাই ২০০৮ সালে সুইজারল্যান্ডে অনূর্ধ্ব ১৭ দলে সুযোগ পেয়ে এক সঙ্গে অনূর্ধ্ব ২১ দল পর্যন্ত খেলেন। জাতীয় দলে ছোট ভাই গ্রানিতের জায়গা হলেও সুযোগ হয়নি তাউলেন্তের। পরে তাউলেন্ত পাড়ি জমান আলবেনিয়ায়।
২০১৬ সালের ইউরোতে দুই ভাই একে অপরের বিপক্ষে মাঠে নামেন। স্টেডিয়ামে তাদের মা দুই ভাইকে দুই দেশের জার্সিতে দেখতে আসেন।
কাহিল:
অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় তারকা টিম কাহিল। দলের হয়ে তিনবার বিশ্বকাপের আসরে যোগ দিয়েছেন তিনি। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের এভারটনের হয়েও খেলেছেন তিনি। তার ছোপ ভাই ক্রিস কাহিল অস্ট্রেলিয়ায় ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করলেও পাশ্ববর্তীদেশ সামোয়ার জাতীয় দলের হয়েও খেলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন