একের পর এক মর্টার শেল নিক্ষেপ, মিয়ানমার আসলে কী চায়?

সীমান্তে মিয়ানমারের একের পর এক মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনাকে যুদ্ধ বা উস্কানির ফাঁদ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনা বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে।

সীমান্তে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। এদিকে সীমান্তের ঘটনায় ঢাকাস্থ মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে আবারো তলব করা হতে পারে।

মিয়ানমার সীমান্তে মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনায় বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। সীমান্ত পেরিয়ে মিয়ানমারের কোনো নাগরিক যাতে বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সে জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে মিয়ানমার কেন বার বার সীমান্তে একই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলে একজন রোহিঙ্গা নাগরিক মারা গেছেন। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। এর আগেও মিয়ানমার থেকে একাধিকবার সীমান্তে মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হয়। সেই ঘটনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিয়াউ মোকে তিনবার তলব করা হয়।

মিয়ানমার সীমান্তে যখন এই ঘটনা ঘটছে, তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিব জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার পথে লন্ডনে অবস্থান করছেন। সীমান্তের ঘটনা তাদের ইতোমধ্যেই অবহিত করা হয়েছে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিয়াউ মোকে তলব করা হতে পারে।

এর আগে গত ২০, ২৮ আগস্ট ও ৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল বাংলাদেশে এসে পড়ে। সে কারণে ২১, ২৯ আগস্ট ও ৪ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে তিনবার সীমান্তের ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। তবে এরপরও সীমান্তে একের পর এক মর্টার শেল নিক্ষেপ করছে মিয়ানমার। অবশ্য মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়েছে, আরাকান বাহিনীর সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সংঘাত চলছে। আরাকান বাহিনীর ওপর ছোড়া মর্টার শেল বাংলাদেশ সীমান্তে এসে পড়ছে বলে দাবি করেছে মিয়ানমার।

মিয়ানমার সীমান্তের ঘটনার বিষয়টি জাতিসংঘে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) তিনি বলেছেন, আমরা যুদ্ধ চাই না। এটা আমাদের স্পষ্ট কথা। আমরা চাই এটার একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে শান্তিপূর্ণভাবে এটা সমাধান করতে। আমরা সেই চেষ্টাই করছি। আমাদের পক্ষ থেকে যদি সেটা সম্ভব না হয়, আমরা বিষয়টি জাতিসংঘের কাছে তুলব।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এর আগে বলেছিলেন, মিয়ানমারের উস্কানি বা কোনো ধরনের ফাঁদে আমরা পা দিতে চাই না। কেননা এই ধরনের কোনো দিকে নিয়ে যেতে পারলে তাদের হয়তো কোনো কৌশলতগত সুবিধা থাকবে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা নিয়ে যে সমস্যায় আমরা আছি, এই সমস্যার দায় আমাদের দিকেও চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হতে পারে।