এক সপ্তাহে কাঁচা মরিচের ঝাঁঝ দ্বিগুণ!
রাজধানীর বাজারগুলোতে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০০ টাকা কেজি দরের নিচে কোথাও কাঁচামরিচ মিলছে না। অথচ এক সপ্তাহ আগেও কাঁচামরিচের কেজি বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকায়। কাঁচামরিচের দামে এমন উলম্ফন ঘটলেও স্থির রয়েছে সবজির দাম। তবে সেখানেও ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই।
সোমবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর রামপুরা, বনশ্রী, মালিবাগ, খিলগাঁও, কমলাপুর, মানিকনগর, ধলপুর, যাত্রাবাড়ি ও গোপীবাগের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদুল আজহার পর থেকেই কাঁচামরিচের দাম বাড়তি। ঈদের আগে কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হয়েছে। কিন্তু ঈদের পরেই হঠাৎ করে কাঁচামরিচের দাম ২০০ টাকায় ওঠে যায়। এরপর দাম কিছুটা কমলেও তা ১০০ টাকার ওপরেই থাকে।
গত শুক্রবার প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকায়। তবে রোববার কিছুটা দাম বেড়ে ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা হয় এবং আজ (সোমবার) হঠাৎ করেই মরিচের দাম কেজিতে এক লাফে ৬০ টাকার ওপরে বেড়ে গেছে।
হঠাৎ দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তারা জানান, আড়তে মরিচের সরবরাহ কম। ফলে দাম বেড়ে গেছে। আড়ত থেকেই খুচরা ব্যবসায়ীদের প্রতিকেজি মরিচ কিনতে হয়েছে গতকালের (রোববার) চেয়ে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা বেশি দিয়ে। যে কারণে ক্রেতাদের কাছেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
রামপুরা বৌ-বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, রোববারও ১৪০ টাকা কেজি হিসেবে এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) মরিচ বিক্রি করেছি ৩৫ টাকায়। কিন্তু আজ (সোমবার) এক পোয়া মরিচ বিক্রি করতে হচ্ছে ৫০ টাকায়। তবে এক কেজি নিলে ১৯০ টাকা রাখা যাবে। এর নিচে মরিচ বিক্রি করার সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, একদিনের ব্যবধানেই কেজিতে ৬০ টাকা বেশি দিয়ে মরিচ কিনতে হয়েছে। দাম বেশি হওয়ার কারণে মরিচ কম এনেছি। আজ (সোমবার) মাত্র ৪ কেজি মরিচ নিয়ে এসেছি। অন্যান্য দিন ৬ থেকে ৭ কেজি মরিচ বিক্রি করি। দাম বাড়লে মানুষ একটু কম কম কিনেন।
যাত্রাবাড়ি কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী মো. হোসেন আলী বলেন, আড়তে মরিচ কম। এ জন্য দাম বেড়ে গেছে। মরিচের সরবরাহ বাড়লে দাম আবার কমবে। তবে কী কারণে আজ মরিচ কম এসেছে এটা বলতে পারছি না।
তিনি বলেন, আমরা হলাম খুচরা ব্যবসায়ী। আড়তে দাম বাড়লে আমাদের কাছেও দাম বাড়বে। আবার আড়তে দাম কমলে আমরাও কম দামে বিক্রি করব। দাম বাড়া-কমার ওপরে আমাদের কোনো হাত নেই। বরং দাম বাড়লে আমাদেরই লোকসান। কারণ, দাম বাড়লে বিক্রি কম হয়।
এদিকে সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব সবজির দাম আগের মতই বাড়তি দাম। প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায়। ধেড়স বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহের মতই প্রতিকেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে।
এ ছাড়া করলা ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়, একই দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন ও বরবটির কেজি এবং পাকা টমেটা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে আগের সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে মসুর ডাল, পিয়াজ, বয়লার মুরগি, গরু ও খাসির মাংস। প্রতিকেজি দেশি মসুর ডাল (ছোট আকারের) বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা এবং মাঝারি দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।
দেশি পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। সাদা বয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়, লাল কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে। গরুর মাংস ৫০০ এবং খাসির মাংস ৭০০ থেকে সাড়ে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ধলপুর বাজারে আসমা বেগম নামের এক ক্রেতা বলেন, শুক্রবারও এক পোয়া কাঁচামরিচ কিনেছি ৩০ টাকা দিয়ে। আজ (সোমবার) এক পোয়া কাঁচামরিচ ৫০ টাকার নিচে কেউ বিক্রি করছে না। একের পর এক সব পণ্যের দাম বাড়ছে। এভাবে দাম বাড়লে আমাদের মত স্বল্প আয়ের মানুষেরা খাবে কী?
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন