‘এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হচ্ছে’
ছাত্রলীগ পেটানোর ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হাওয়া এডিসি হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, এডিসি হারুনের ঘটনাটির তদন্ত হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা চাইলে মামলা করতে পারেন। বিভাগীয় মামলা হতে পারে।
এদিকে শাহবাগ থানায় ওসির (তদন্ত) কক্ষে ছাত্রলীগ নেতাদের মারধরের ঘটনায় পুলিশের একশ্রেণির কর্মকর্তার মধ্যে মতানৈক্য তৈরি হয়েছে। একটি পক্ষ মনে করছে, সেই রাতে ঘটনা যা ঘটেছে, তার চেয়ে বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এমনটি করা হচ্ছে। অন্য একটি পক্ষের বক্তব্য, এডিসি হারুন-অর-রশীদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ানোর ঘটনা নতুন নয়। আগের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ঘটনায় তাকে জবাবদিহির আওতায় না আনায় তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বাহিনীর সুনাম বাড়বে।
ডিএমপির তিন সদস্যের একটি দল ঘটনার সূত্রপাত, পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ এবং সেখানে উপস্থিত প্রত্যেকের ভূমিকা নিরূপণে কাজ করছে। পুলিশ সূত্র জানায়, এ কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে দুদিনের সময় দিয়েছিলেন ডিএমপি কমিশনার। কিন্তু তদন্তের পরিধি বিস্তৃত হওয়ায় তারা আরও পাঁচ দিন সময় পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ডিএমপির ডিসি মো. ফারুক হোসেন। ইতোমধ্যে কমিটি এডিসি হারুন-অর-রশীদ, এডিসি সানজিদা আফরিন, পরিদর্শক মো. গোলাম মোস্তফা, ঘটনার মূল ভুক্তভোগী ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম, আরেক আহত ছাত্রলীগের বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিমসহ অন্তত ১০ জনের বক্তব্য নিয়েছে। এডিসি সানজিদা আফরিনের স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক খান মামুনকে চিঠি দিয়ে বক্তব্য নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তদন্ত সূত্র জানায়, এডিসি হারুন ও সানজিদা তদন্ত কমিটির কাছে এ ঘটনার মূল দায় দিয়েছেন এপিএস মামুনের ওপর। অন্যদিকে ঘটনার ভুক্তভোগীরা পুলিশের কমিটির কাছে ঘটনার আদ্যোপান্ত ও নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরেছেন।
এদিকে এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা। এখন পর্যন্ত এডিসি হারুন-অর-রশীদের চাকরিচ্যুতির দাবি ছাড়া প্রায় সব দাবিই পূরণ হয়েছে। ছাত্রলীগ, পুলিশ ও সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ঘটনাটি ঘিরে যাতে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেটি নিশ্চিত করাই ছিল মূল লক্ষ্য। এজন্য ঘটনার পরপরই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে দায়িত্বশীল ভূমিকায় থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শাহবাগ থানা ফটকে গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করলে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এর পরদিন এডিসি হারুনকে রমনা জোন থেকে প্রত্যাহার করে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজম্যান্টে (পিওএম) সংযুক্ত করা হয়। আবার সেদিনই তাকে এপিবিএন-এ বদলি করা হয়। এ নিয়ে আপত্তি উঠলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। এ নিয়েও আপত্তি জানিয়েছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ তাকে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। এতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অনেকটা শান্ত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, এডিসি সানজিদার সঙ্গে যোগাযোগের সূত্র ধরে রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল এডিসি হারুনের। ঘটনার ধারাবাহিকতায় গত শনিবার রাতে শাহবাগ থানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে বেধরক মারধর করেন এডিসি হারুন। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন