ঐক্যফ্রন্টে যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য
সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন নিলেন সিলেট জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য নজরুল ইসলাম।
দলীয় বহিষ্কারাদেশ নিয়ে দীর্ঘ এক যুগের বেশি রাজনীতির বাইরে থেকে সম্প্রতি যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে গণফোরামে যোগ দেন জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম।
এরপর গণফোরামের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেনের নির্দেশে নজরুল তার নির্বাচনী এলাকায় কাজ শুরু করেন। ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে নির্বাচন করার জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দেন তিনি।
হঠাৎ দল বদলের কারণ জানতে চাইলে ছাত্রলীগের তৃণমূলের রাজনীতির মাধ্যমে উঠে আসা নজরুল ইসলাম বলেন, আমি তো দল ত্যাগ করিনি। আওয়ামী লীগ আমাকে ত্যাগ করেছে, বহিষ্কার করেছে। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য আমি কেন্দ্রে আবেদন করেছিলাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে দলীয়ভাবে তদন্ত কমিটিও হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই তদন্ত আলোর মুখ দেখেনি। ফলে দীর্ঘ এক যুগ অপেক্ষা শেষে ড. কামাল হোসেনের ছায়ায় এসেছি।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে নজরুল ইসলাম আরও বলেন, গণফোরাম থেকে আমি মনোনয়ন নিয়েছি। এখন এ ব্যাপারে দলীয় এবং ঐক্যফ্রন্টের আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তবে মনোনয়ন না পেলেও আক্ষেপের কিছু নেই।
নজরুল ইসলাম ১৯৮০ সালে সিলেট এমসি কলেজের ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৮৪ সালে তিনি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। তখন যুবলীগের সভাপতি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ইফতেখার হোসেন শামীম। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন নজরুল ইসলাম।
২০০৪ সালে সিলেট জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হন তিনি। এর আগে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন নজরুল।
২০০৪ সালে আহ্বায়ক থাকাকালীন জেলা যুবলীগের সম্মেলনে মারামারি হলে কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘ভুল বোঝাবুঝিতে’ দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাতীয় নেতা সামাদ আজাদ বলয়ের একজন সক্রিয় কর্মী।
২০০৫ সালে আব্দুস সামাদ আজাদ মারা যাওয়ার পর শূন্য হওয়া আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে উপ-নির্বাচনে ফুটবল প্রতীক নিয়ে অংশ নিয়ে ২২ হাজার ভোট পান নজরুল ইসলাম। একদিকে বহিষ্কার অন্যদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণ দল থেকে তাকে দূরে সরিয়ে দেয়।
বহিষ্কারের কারণ জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম বলেন, ২০০৪ সালে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সিলেট যুবলীগের সম্মেলন হয়েছিল। সেখানে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত ও কেন্দ্রীয় নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
সেই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সদ্য আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া আবুল মাল আবদুল মুহিত। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি। আর কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে শেখ সেলিম উপস্থিত ছিলেন। ওই সম্মেলনের সময় বাইরে যুবলীগের প্রার্থীদের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে মারামারি এবং গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত করে যুবলীগ থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হয়। এক যুগ পরও আমার বহিষ্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় অবশেষে ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়ে গণফোরাম থেকে আমি মনোনয়ন নিয়েছি। আমি ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচন করতে চাই।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন