ঐতিহাসিক সফরে ফিলিস্তিনে মোদি
স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার ৩০ বছর পর ভারতের প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঐতিহাসিক সফরে রাজধানী রামাল্লায় পৌঁছেছেন নরেন্দ্র মোদি। জর্ডানের রাজধানী আম্মান থেকে হেলিকপ্টারে করে শনিবার সকালে রামাল্লায় পৌঁছান তিনি। এসময় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটিকে কড়া পাহাড়ায় ফিলিস্তিনে পৌঁছে দেয় ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর কয়েকটি বিমান। তাকে স্বাগত জানান ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী রামাল্লায় ফিলিস্তিন মুক্তি আন্দোলনের (পিএলও) নেতা ইয়াসির আরাফাতের স্মারক শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেন। পরে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে দু’দেশের কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
নয়াদিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বৈঠকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার হলেও, তা ফিলিস্তিনের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ দিনের সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টকে জানান মোদি।
রামাল্লায় একটি সুপার-স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের উদ্বোধন করেন ভারতের এই প্রধানমন্ত্রী। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস মোদির সফরকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন। মোদিকে তিনি ‘মহান অতিথি’ বলেছেন।
গত বছর ভারত সফর করেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। এদিকে, ফিলিস্তিন থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমান সফরে যাবেন মোদি। পরে সেখান থেকে সোমবার দিল্লিতে ফিরবেন তিনি।
১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনের দাবিকে কামান ও বন্দুকে দাবিয়ে ইসরায়েল একতরফাভাবে নিজেকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণার পর থেকেই ফিলিস্তিনের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে এসেছে ভারত। ১৯৮৮ সালে যখন ৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ গাজা ও পশ্চিম তীরকে দখলমুক্ত করার জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পিএলও নেতা ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বে প্রথম ‘ইন্তিফাদা’ শুরু হয়, তখন তাতে সমর্থন জানায় ভারত। ওই সময় দিল্লিতে এলে আরাফাতকে অভ্যর্থনা জানান ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
কিন্তু গত বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ইসরায়েল সফরের পর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, ফিলিস্তিনের প্রতি এতদিনের অবস্থানে কি অটল থাকবে ভারত?
গত ৬ ডিসেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেল আবিব থেকে ইসরায়েলের মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর ভারতের ভূমিকা কী হবে, তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছিল। গত এক বছরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়েছে।
কিন্তু মোদির সরকার ভারতের পুরনো অবস্থান বদলায়নি। ট্রাম্পের ঘোষণার বিরুদ্ধে যে প্রস্তাব গৃহীত হয় জাতিসংঘে, তাতে ১২৭টি দেশের সঙ্গে ভারতও ভোট দেয় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। যা ইসরায়েলের বিপক্ষে যায়। -আনন্দবাজার
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন